সিরাজদিখান থানা সংলগ্ন রশুনিয়া উপ-স্বস্থ্য কেন্দ্রের মূল্যবান সম্পদ চুরি যাচ্ছে। প্রভাবশালী জমিদাররা এই এলাকার মানুষের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু এখন হরদম চুরি যাচ্ছে কেন্দ্রটির মূল্যবান সম্পদ। প্রায় ৩ একর জমি নিয়ে বাগানবাড়ি, পুকুর, ছোট-বড় ৭টি দালান-কোঠা কাঠ টিনের ঘর নিয়ে এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যা আজ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নিলে এটি অন্যতম চিকিৎসালয় কেন্দ্র হতে পারতো। চুরি ঠেকাতে নেই কার্যকরী ব্যবস্থা।
১৭শ’ শতাব্দীর গোড়াপত্তনে এককালের গরীব দুঃখী মানুষের সেবায় ছোট আকারে একজন কম্পাউন্ডার দিয়ে চিকিৎসা শুরু করে। ১৮শ’ শতক থেকে ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের আগে পর্যন্ত জমিদারদের তত্বাবধানেই এইখানে চিকিৎসা সেবা চলত। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান হিন্দুস্থান হওয়ার পর ১৯৪৭ থেকে ১৯৬২ সাল জমিদারী প্রথা থাকার আগ পর্যন্ত জমিদাররা কলকাতায় বসে জমিদারী ও চিকিৎসা কেন্দ্রটি দেখা-শুনা করতো। জমিদারী প্রথা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার এর দেখাশোনা করতেন। পরবর্তীতে সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র মূল উপজেলার থেকে তিন কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এটি একটি উপ-স্বস্থ্য কেন্দ্রে পরিনত হয়। এই স্থানে গরীব দুঃখী রোগী ও কাছা কাছি লতব্দী,রশুনিয়া ও বালুরচর ইউনিয়নের অশংখ্য রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। প্রথম দিকে ডাক্তার,ফার্মসিষ্ট,পিয়ন,ঝাড়–দার সপরিবার নিয়ে এখানে থেকে চিকিৎসা সেবা দিলেও পরে ডাঃ সামসুল হুদা, ডাঃ রওশন আলী, ডাঃ উলফাত আরার পরে কোন এম বি বিএস ডাক্তার এই খানে থাকেননি। এরপর থেকে কোয়টার গুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩ একর জমির ওপর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থান হলেও চারপাশের অনেক জমি ভূমিদস্যুরা দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে ১টি পুকুর, বিশাল মাঠ ও ছোট বড় ২ টি দালান ৩টি টিন কাঠের ঘর কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বিশাল পুকুরটি টেন্ডার ছাড়াই উৎকোচ নিয়ে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রর কর্মচারীরা ইজারা দিচ্ছে। রাজস্ব পাচ্ছেনা সরকার। প্রতিনিয়ত চুরি হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান দরজা-জানালা, লোহার কারুকার্যখচিত প্রতœতত্ত্ব। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে নিয়মিত কোন এমবিবিএস ডাক্তার না থাকায় রোগীরি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতাল টিতে রাতেরবেলা চোর-ডাকাতদের গাজা ও ইয়াবা বিক্রি ও সেবন কারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। সিরাজদিখান রশুনিয়া উপ-স্বস্থ্য কেন্দ্রটি ১০ শর্য্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপনের জন্য এলাকাবাসী দাবি জানান।
সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বেগম উলফাত আরা বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির বাউন্ডারী ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী না থাকাতে আমরা রশুনিয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ অন্যান্য উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র চুরির হাত থেকে রক্ষা করতে পারছি না।