৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ৯:৫৭
সংসদে মুন্সিগঞ্জের সিমেন্ট ফ্যাক্টরীগুলোকে এক হাত নিলেন মৃণাল কান্তি দাস
খবরটি শেয়ার করুন:

২৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির ভাষনের উপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাব এর উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস।

একাদশ সংসদে প্রথমবারের মত বক্তব্যে মুন্সিগঞ্জের সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোকে এক হাত নেন তিনি।

মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘আমি সংশ্লিষ্টদের আহবান জানাবো- তুরাগ, বুড়িগঙ্গা পার হয়ে আসুন ধলেশ্বরী, শীতলক্ষা, মেঘনার মুন্সিগঞ্জ থেকে চাঁদপুর মোহনা পর্যন্ত দেখে যান শিল্পায়নের নামে লুটেরা ধনিক-বণিক গোষ্ঠী কী নিষ্ঠুরভাবে পরিবেশ ধ্বংস করে চলেছে। পানি পরিশোধন না করেই ডায়িং, লবণ, সিমেন্ট, ক্যামিক্যাল ফ্যাক্টরি, কাগজের কারখানাগুলো দূষিত বর্জ্য সরাসরি নদীবক্ষে ফেলে দিচ্ছে। সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোতে ডাস্ট-ম্যানেজমেন্ট নেই বললেই চলে। সারাবছর মুন্সিগঞ্জ ও গজারিয়ার বিস্তৃর্ণ অঞ্চল সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর ধুলা ও ধুয়ায় কোয়াশার মতো আচ্চন্ন থাকে- শিশুরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, রবি শস্য ও ফল-ফলাদি উৎপন্ন হচ্ছে না। সাপ-ব্যাঙ-মাছ নদীতে ভেসে পচে-গলে নদীর দুই পাড়ের মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ-গজারিয়ার বিস্তৃর্ণ এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এই সকল নদীর পানি আলকাতরার মতো ভারি রং ধারন করেছে।

সিমেন্ট কারখানাগুলোর সিমেন্টসহ অন্যান্য ফ্যাক্টরিগুলোর নদী দখলের কারণে এবং যত্রতত্র তাদের পণ্যবাহী লাইটার জাহাজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখার কারণে দেশের বৃহত্তর নদী পথে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এই সকল শিল্পপতিরা সরকারি খাস জমি, কৃষকের জমি দখল করেই ক্ষ্যান্ত হচ্ছে না রাতারাতি খাল-বিলও তারা ভরাট করে ফেলছে। আমি সংশ্লিষ্টদের কাছে আহ্বান জানাই- আসুন তদন্ত করুন, ব্যবস্থা নিন। পরিবেশের ভারমস্য রক্ষা করুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনার অভিপ্রায় অনুযায়ী আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ বাসযোগ্য নাগরিক জীবন নিশ্চিত করি।’

রাষ্ট্রপতির ভাষনের উপর প্রায় ২৫ মিনিটের বক্তব্যে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা-সমৃদ্ধ দূরদর্শী ভাষণ দিয়েছেন। যে ভাষণের প্রতি লাইনে প্রতি, পাতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার গত দশ বছরের ধারাবাহিক সাফল্যের উপাখ্যানের স্বার্থক প্রতিফলন ঘটেছে।’

তিনি এসময় বিডিআর বিদ্রোহে নিহতদের স্মরণ করে বলেন, ‘স্মরণ করছি আজকের এই দিনে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তদানিন্তন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় নিহত আমাদের গর্বের ধন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী জাতীয় সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক ৫৭জন বীর সেনা কর্মকর্তাসহ নিহত সকলকে। গভীর শোকের সাথে স্মরণ করছি ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি। এ ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীনদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।’

সরকারের অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানকে অভিনন্দন জানিয়ে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘আমাদের জাতীয় জীবনে যখনই দুর্ঘটনা বা অঘটন ঘটে তখনই আমরা তোড়-জোড় করি- দেশবাসীকে আশার কথা শোনাই, পরে যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই ফিরে যাই। নির্বাচনের পর নতুন সরকার তুরাগ থেকে বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজ হাতে নিয়েছে। জানি না, তা কত দিন অব্যাহত থাকবে। তবে- মাননীয় মন্ত্রীবর্গসহ সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলবো- থামবেন না, কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির ভবন তা যেন বিবেচ্য না হয়, বিবেচনা শুধু একটিই বৈধ না অবৈধ।’

error: দুঃখিত!