মুন্সিগঞ্জ, ২৭ জানুয়ারি, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এবং মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি মিজানুর রহমান সিনহা রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত ২২ জানুয়ারি দলের সব পদ ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দেন বলে গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘গত কয়েক বছরে আমার ব্যবসায়িক ব্যস্ততা বাড়ার পাশাপাশি শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমার রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। সেহেতু আমি রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণরূপে অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মিজানুর রহমান সিনহা ১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়ের ডহুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হামিদুর রহমান সিনহা ও মাতার নাম নূরজাহান সিনহা।
হামিদুর রহমান বাংলাদেশের ঔষধ ব্যবসায়ের অন্যতম পথিকৃৎ ও শিল্পগোষ্ঠী একমি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। সিনহা শৈশবে কলকাতায় বেড়ে উঠেন। পরবর্তীতে নারায়নগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় স্নাতক সম্পন্ন করেন।
১৯৬৪ সালে সিনহা হাবিব ব্যাংকে চাকুরীর মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তার পিতার মৃত্যুর পর ১৯৭৫ সালে তিনি পিতার প্রতিষ্ঠিত একমি গ্রুপে যোগদান করেন। ১৯৮৩ সাল থেকে তিনি গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
সিনহা ছাত্রজীবনে রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। সরকারি তোলারাম কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।১৯৯০ সালের মিজানুর রহমান সিনহা বিএনপিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান।
সিনহা মুন্সিগঞ্জ-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে ১৯৯৬ সালে সপ্তম ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে যথাক্রমে ৫৮,৪৫৫ ও ৮৩,৬২৩ ভোট লাভ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নূরুল ইসলাম খান বাদল ও সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলিকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি একই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে এমিলির কাছে পরাজিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় একই আসনে বিএনপির মনোনয়ন লাভ করেন।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করলে ২২ মে ২০০৩ সালে তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।