মুন্সিগঞ্জ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ মৃধার ‘অনৈতিক কাজের ভিডিও’ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ১৯ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অন্তত ২০০ ফেসবুক পোষ্ট থেকে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
অনেকে জেলার নুর মোহাম্মদকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য ও সমালোচনা করেছেন। মন্তব্যের ঘরে কেউ কেউ তার বিভিন্ন অপকর্ম-অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি দিয়েছেন। কেউ আবার নারীর সম্মানের কথা চিন্তা করে এরকম ব্যক্তিগত মুহুর্তের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার সমালোচনা করেছেন।
একটি সূত্রের দাবি, ভিডিওটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের পূর্বের। তখন নুর মোহাম্মদ মাগুরা জেলা কারাগারে দায়িত্বরত ছিলেন। সেসময় জনৈক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ঘটনাক্রমে ওই নারীর সাথে রুমের ভেতর উলঙ্গ অবস্থায় ধরা পড়েন নুর।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক জেলার নুর মোহাম্মদ সদৃশ পুরুষ ও এক নারীকে উলঙ্গ অবস্থায় আটক করে ভিডিও করছেন। এসময় পাশে ঘাটের উপরে এক শিশু কান্নাকাটি করছিলো।
ভিডিওতে থাকা নারী ভিডিওধারণে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের বারবার বাঁধা দিলেও সেটি উপেক্ষা করেই ভিডিও করেন তারা। এসময় দলটিতে অংশগ্রহণকারী আরও দুইজন পুরুষ জেলার নুর মোহাম্মদকে ঘিরে ধরে প্যান্ট টেনে খোলার চেষ্টা করছেন। জেলার নুর মোহাম্মদ এসময় তাদের কাছে কাকুতি-মিনতি করলেও তারা অনুরোধ রাখেননি।
সম্প্রতি ১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও আইডি থেকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বেশিরভাগ পোষ্টের সাথে একইধরনের মন্তব্য জুড়ে দেয়া হয়েছে।
লেখা হয়েছে- ‘অপরাধী সংশোধনাগার’ বলা হলেও দেশের সবগুলো কারাগার অনিয়ম, দুর্নীতি, অপরাধ, অপকর্মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সেখানে খোদ কারা কর্মকর্তারা লাগামহী দুর্নীতি-লুটপাটের বাণিজ্য যেমন ফেঁদে বসেছেন তেমনি তারা গড়ে তুলেছেন অপরাধ অপকর্মের বহুমুখী আস্তানা।
তবে ভিডিওটি কোন প্রযুক্তি দ্বারা সম্পাদিত কি না সেটি স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি আমার বিক্রমপুর।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুন্সিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ মৃধার মোবাইল ফোনে কয়েক দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে এ প্রসঙ্গে জানতে মুন্সিগঞ্জ জেল সুপার মো. বদরুদ্দোজার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টাও করে আমার বিক্রমপুর। তিনিও কল গ্রহণ করেননি।
জানা গেছে, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ বিভাগসহ জেলা কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও প্রত্যক্ষ করেছেন। জেলা কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশাসনের সবাই বিষয়টি নিয়ে নিশ্চুপ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। এ ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে বা বক্তব্য দিতে তারা অপারগতা প্রকাশ করেছেন।