শিহাব অাহমেদঃ কেন্দ্র থেকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষনার ১০মাস পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি ছাত্রলীগ। অথচ কেন্দ্রের ঘোষনা অনুযায়ী এই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২মাস পর জুলাইয়ে।
এর মধ্যেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে না পারলে দুই সদস্য নিয়ে মেয়াদ শেষ করে রেকর্ড গড়বে মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ।
গত বছরের ২৫ই মে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসেবে মেয়াদ শেষ হচ্ছে অার ১০দিন পর। তবে সম্মেলনের প্রায় ৫৫দিন পরে ১৯ই জুলাই কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষনা করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ-প্রত্যাশী অনেকেই মনে করেন কমিটি করতে না পারার পেছনে দায়ী জেলা অাওয়ামীলীগে বিবদমান ‘কোন্দল’।
ছাত্রলীগের শীর্ষ দুটি পদই চেয়েছিলেন জেলা অাওয়ামীলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন অাহম্মেদ। কিন্তু কেন্দ্রীয় অাওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা স্থানীয় সাংসদ মৃণাল কান্তি দাস এই প্রথম ভাগ বসাতে সামর্থ্য হন জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ অাহম্মেদ পাভেল মৃণালের সৃষ্টি। অার এখানেই ঘুড়পাক খাচ্ছে পূর্ণাঙ্গ কমিটির ‘রাজনীতি’।
কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন সমর্থিত ফয়সাল মৃধা গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে চান তার পছন্দনুযায়ী ছাত্রলীগ কর্মীদের। যারা হবে মহিউদ্দিন ভাবাদর্শের। অাবার একই পদ চান পাভেলও। যেখানে থাকবে মৃণাল ভাবাদর্শের রাজনীতিকরা। এভাবে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের লিয়াজু করতে করতেই পেরিয়ে গেছে ১০মাস।
এর মধ্যে কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য কয়েক দফা চাপ এলেও গায়ে লাগাননি তারা কেউই।
জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষনার পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষনা এলেও কয়েক মাসের মাথায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা, সাবেক কমিটির উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও বর্তমান কমিটিতে পদ-প্রত্যাশী মোঃ শামীম বলেছেন- পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার ঘোষনায় অারও ৬মাস অাগে ‘বায়োডাটা’ জমা দিয়েছি। ‘বায়োডাটা’ এখন কোথায় কি অবস্থায় অাছে জানি না।
সাবেক কমিটির দপ্তর সম্পাদক খাইরুল ইসলাম পলাশ বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি সুচারু ও সূক্ষ্ম ভাবে করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাই একটু দেরি হতে পারে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ অাহম্মেদ পাভেল এর কাছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে নাগাদ হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন-‘যাচাই-বাছাই চলছে। প্রথমে একটি খসড়া কমিটি হবে তারপরে ফুল কমিটি। খুব শীঘ্রই চমক দেখা যাবে’
কোন্দলের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মৃধা বলেন, ‘কোন ছাত্রলীগ কর্মীকে অামরা কোন্দলের বলি বানাতে চাইনা, তাই সময় নিয়ে কমিটি করছি’
১০মাসেও কমিটি করতে না পারা মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের ব্যার্থতা কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘অবশ্যই ব্যার্থতা। তাদের কোন্দলের বিষয়টি অামরা জানি। কিন্তু এর দায়ভার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিবে না। তাদেরকে কয়েকবার নির্দেশ দিয়েছি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে। এবার পদক্ষেপ নেয়া হবে’।