২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | রাত ১০:১০
মুন্সিগঞ্জে মা ইলিশ নিধনের মহা উৎসব, হাট বসিয়ে ইলিশ বিক্রি
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৬ অক্টোবর, ২০২০, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)

গত বুধবার থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইলিশ প্রজননের প্রধানতম দুই নদী পদ্মা ও মেঘনা ঘেষা মুন্সিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানের মত সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের বকচরে মা ইলিশ নিধনের মহা উৎসব চলছে। ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে সেখানে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে।

আজ শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিন আধারা ইউনিয়নের বকচর, কালিরচর, চরআব্দুল্লাপুর গ্রাম ঘেঁষা মেঘনা নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ডিমওয়ালা মা ইলিশ বিক্রির ধুম পড়ে যাচ্ছে।

ডিমওয়ালা মা ইলিশ। ছবি: আমার বিক্রমপুর।

যাতায়াতে অসহনীয় দুর্ভোগ থাকলেও পায়ে হেটে অথবা যে কোন উপায়ে দূরদুরান্ত থেকে বয়োবৃদ্ধ থেকে শুরু করে তরুণ যুবকরা মেঘনার পাড়ে ভিড় করছেন মা কমদামে মা ইলিশ কেনার জন্য।

৪ টি মা ইলিশের দাম উঠেছে মাত্র দেড়শ টাকা। মুনাভালোভী জেলেদের হাট থেকে ব্যাগ ভর্তি মা ইলিশ কিনে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরছেন এক বয়োবৃদ্ধ ও নারী। ছবি: আমার বিক্রমপুর।

যেসব জেলেরা মা ইলিশ ধরছেন দুপুরের দিকে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় তাদের সাথে। এর আগে যাওয়ার পথে বাড়িতে বাড়িতে দেখা মেলে নিষিদ্ধ ঘোষিত কারেন্ট জালের। মা ইলিশ ধরতে যার ব্যবহার এখন তুঙ্গে।

বাড়িতে উঠোনে শুকানো হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। যা দিয়ে সকালে এক দফায় মা ইলিশ নিধন চলেছে। বিকেলে দ্বিতীয় দফায় আবার মা ইলিশ নিধন চলবে। ছবি: আমার বিক্রমপুর

জেলেরা সাংবাদিক শুনে বারবার বলার চেষ্টা করছিলেন- এ বছর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তারা ট্রলারের তেল খরচ ও বিভিন্ন জায়গায় মাসোয়ারা দিয়ে উল্টো দীর্ঘমেয়াদী লোকসানে পরার আশঙ্কা করছেন।

তবে একটু পরেই দেখা গেলো আসল চিত্র। দুপুর আড়াইটা বাজার সাথে সাথেই অর্ধশতাধিক ট্রলার মেঘনায় মা ইলিশ ধরার একমাত্র উদ্দেশ্য নিয়ে তীর ছেড়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি ট্রলারে ৪-৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। আর ট্রলারে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘অভিযান নিরোধক’ উচ্চগতি সম্পন্ন ইঞ্জিন। যা মূলত অভিযানে আসা বিভিন্ন দপ্তরের সিবোটকে পাল্লা দিতে বিশেষভাবে কার্যকর।

মেঘনা নদীতে দ্রুতগতির ট্রলার দিয়ে চলছে অবাধে ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধন। ছবি: আমার বিক্রমপুর।

ছেড়ে যাওয়া ট্রলারগুলো ৫-১০ মিনিটের দূরত্বে গিয়েই ট্রলারে থাকা কারেন্ট জাল ছড়িয়ে দিচ্ছেন নদীতে। ২০-৩০ মিনিট পরই সেগুলো আবার টেনে তুলছেন জেলেরা। সাথে উঠে আসছে শত শত ডিমওয়ালা মা ইলিশ। মাছসহ জাল টেনে উঠানোর পরে পাড়ে অপেক্ষমান ক্রেতাদের কাছে সেগুলো এনে বিক্রি করছেন জেলেরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মন্ডল ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঐ এলাকায় আজ সকালেও অভিযান হয়েছে। এছাড়াও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন জায়গা থেকে আজ মা ইলিশ ধরার অপরাধে জেলেদের জেল ও জরিমানা করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের আরও সচেতন হতে হবে। এটি একটি অপরাধ। ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। সে হিসেবে এটি একটি রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধও।

তিনি বলেন, ‘যারা ওখানে মাছ কিনতে যাচ্ছেন তাদেরও আমরা বলবো বিরত থাকতে। অন্যাথায় তাদেরও জেল-জরিমানার মুখোমুখি করা হবে।’

error: দুঃখিত!