মুন্সিগঞ্জ ৮ নভেম্বর, ২০১৯, কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু (আমার বিক্রমপুর)
জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে থাকা এসব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারায় দীর্ঘ ১১ বছরেও সরকারি এসব সম্পদের মূল্য আরও কমে গেছে। নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়া কয়েক ধাপে হওয়ায় তা ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়।
অন্যদিকে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত না করা, রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে অকেজো ফেরি ও পন্টুনগুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ফেরি ও পন্টুনের কিছু যন্ত্রাংশ রাতের আঁধারে লোপাট করে অন্যত্র বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে সওজের সার্ভে প্রতিবেদন পাওয়ার পর সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেশ ক’টি ফেরি কম মূল্যে নিলামে বিক্রি করে দেওয়ায় বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জ শহর ঘেঁষা ধলেশ্বরী নদী ফেরিতে পারাপার হয়ে মুন্সিগঞ্জ -পঞ্চবটী-ঢাকা সড়কে যাতায়াত করত জেলাবাসী। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত ষষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু (মুক্তারপুর সেতু) উদ্বোধনের পর মুক্তারপুর ফেরি পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। আর সেখানে থাকা ফেরি ও পন্টুুন দেশের বিভিন্ন ফেরিঘাটে স্থানান্তর করা হয়। মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরসহ অন্যান্য জেলার ফেরি সার্ভিসে অকেজো ও পরিত্যক্ত হয়ে পড়া ফেরি ও পন্টুুনগুলো বিআইডব্লিউটিএ ধলেশ্বরী নদীর পুরোনো মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো করে রাখা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত না করা, রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে সরকারি সম্পদ অকেজো ফেরি ও পন্টুনগুলো মরিচা ধরে বিনষ্ট হতে শুরু করে। এর মধ্যে ফেরি ও পন্টুনের কিছু যন্ত্রাংশ রাতের আঁধারে লোপাট করে অন্যত্র বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া ধলেশ্বরী নদীতে একাধিক ফেরি ও ডুবিয়ে রাখায় পশ্চিম মুক্তারপুর প্রান্তে পন্টুনের একাংশ কাদায় দেবে গেছে। সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছে, ফেরিগুলোর সচল ইঞ্জিনসহ মেশিনারিজ রক্ষণাবেক্ষণের অবহেলায় অনেক আগে থেকেই বিকল হয়ে গেছে। এসব সরকারি সম্পদ দেখভাল করতে পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকায় নিরাপত্তা প্রহরীসহ বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুন্সিগঞ্জ সওজের এক কর্মকর্তা জানান, মুক্তারপুর এলাকায় সংরক্ষণ করা ফেরি ও পন্টুুনগুলো এখন মেরামতের অযোগ্য। যতই দিন যাচ্ছে সেগুলো মরিচা পড়ে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ায় নিলামে বিক্রি করলে সরকারি কোষাগারে যে টাকা জমা হতো, সেই টাকার পরিমাণ আরও কমে আসছে।
বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (ফেরি রক্ষণাবেক্ষণ) সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, অকেজো ও পরিত্যক্ত ঘোষিত ফেরিগুলো মেরামত করে নতুন করা ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। বিষয়টি উল্লেখ করে সার্ভে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। পরে অকেজো ফেরিগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।