মুন্সিগঞ্জ, ২৮ মে ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বাহিনী ছেড়ে দেওয়ার মনোমালিণ্যের জেরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে তালিকাভুক্ত এক সন্ত্রাসীর দু’চোখ থেতলে দিয়েছে ম্যাগনেট গ্রুপের সহযোগী সন্ত্রাসীরা। এসময় দু’পা পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তার নাম রাসেল হাওলাদার (২৭)।
মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাত আড়াইটার দিকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাঘরা ইউনিয়নের মাগডাল গ্রামের একটি মেহগনি-চাম্বল বাগানে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে গুলির শব্দ পেয়ে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে রাসেলকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গোপনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সে বাঘরা ইউনিয়নের রুদ্রপাড়া গ্রামের প্রয়াত হাশেম হাওলাদারের ছেলে।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই বাঘরা ইউনিয়নের পূর্ব বাঘরা গ্রামের মেজবাহ উদ্দিন ম্যাগনেটের নেতৃত্বে গড়ে উঠা একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর আনাগোনা চলে আসছে। পরিচিতি পায় “ম্যাগনেট গ্রুপ” নামে। এ গ্রুপের সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতংকের জনপদে পরিণত হয়ে উঠেছে বাঘরা। রাসেল এ গ্রুপের অন্যতম সদস্য। সম্প্রতি সে ম্যাগনেট গ্রুপ ছেড়ে আলাদা হয়। এনিয়ে রাসেলের সঙ্গে মনোমালিণ্য দেখা দেয় ম্যাগনেট বাহিনীর প্রধান মেজবাহউদ্দিন ম্যাগনেট, শাকিল চৌকিদার ও বাবুর। ওই মনোমালিন্যের জের ধরে রাসেলকে একা পেয়ে ম্যাগনেট গ্রুপের সদস্যরা ধরে নিয়ে মাগডাল গ্রামের খলিলুর রহমান লস্করের মেহগনি ও চাম্বল বাগানে। সেখানে গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে দু’চোখ থেতলে দেয়। একই সঙ্গে হাটুর নিচে দু’পা পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ম্যাগনেট গ্রুপের প্রধান মেজবাহ উদ্দিন ম্যাগনেট। মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। এমনকি ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। ঘটনাটি ঘটিয়েছে স্থানীয় উত্তেজিত মানুষ। গ্রামবাসী রাসেলকে গণপিটুনি দিয়েছে।
শ্রীনগর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকিল আহমেদ জানান, ম্যাগনেট গ্রুপের অভ্যন্তরীন কোন্দল ও বিরোধের জেরে গভীর রাতে ওই ঘটনা ঘটেছে। আহত অবস্থায় রাসেলকে ঢাকার কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাসেল হত্যা ও মাদকসহ অন্তত ১৬ টি মামলার আসামী।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, আধিপত্য ও অভ্যন্তরীন কোন্দল থেকে ওই ঘটনার সূত্রপাত। ইতোমধ্যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।