মুন্সিগঞ্জ, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি মুন্সিগঞ্জ সদরের রমজানবেগ থেকে চরকেওয়ার ইউনিয়নের আলিরটেক পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ। ছয়মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও নয় মাস পেরিয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে দুই দফায়। কিন্তু তারপরও উদাসীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটি শেষ করার পেছনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ‘দুর্বলতা’ দেখছে এলজিইডি। এবার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারলে কঠোর ব্যবস্থার কথা বলছে তারা।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার রমজানবেগ থেকে চরকেওয়ার ইউনিয়নের আলিরটেক পর্যন্ত সড়কটিতে ইটের সুড়কি বসানোর পর আর এগোয়নি কাজ। বর্তমানে ধুলাবালিতে জর্জরিত পুরো সড়ক। এতে ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে এই পথে নিত্য চলাচলকারী কয়েক হাজার মানুষের।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটি দিয়ে চরকেওয়ার ইউনিয়নের উত্তর চরমশুরা, কুয়েত, দক্ষিণ চরমশুরা, আলিরটেক, বসারচর, ফকিরকান্দি আধারা ইউনিয়নের জাজিরা, সৈয়দপুর, বকচর, শিকদারকান্দি, চরআব্দুল্লাহ, ঢালিকান্দী এলাকার ১০-১৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন অটো-মিশুক বা অন্যান্য যানবাহনে যাতায়াত করেন। কিন্তু সড়কে উচু নিচু ইটের সুড়কি থাকায় যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। তাছাড়া অস্বাভাবিক ধুলাবালুর কারনে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় মানুষের।
আধারা ইউনিয়নের জাজিরা এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী মাহমুুদুল হাসান বলেন, এই পথে সপ্তাহে ৩-৪ দিন যাতায়াত করতে হয়। এক বছর ধরে কাজ ধরেছে দেখছি। কিন্তু শেষ করার কোন আলামত দেখি না। প্রতিদিন ধুলাবালুর মধ্যে যাতায়াত করতে অসহ্য লাগে।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব আল আমিন গাজী বলেন, আমি এমনিতেই শ্বাসকষ্টের রোগী। এই রাস্তায় ধুলাবালুর কারনে চলতেই পারি না। বাড়ি থেকে বের হই নাকমুখে গামছা দিয়ে।
উপজেলা প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, গেল বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার রমজানবেগ থেকে চরকেওয়ার ইউনিয়নের আলিরটেক পর্যন্ত ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে মা মুনতা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যেটি শেষ করার কথা ছিলো জুলাইতে। নির্ধারিত সময় শেষ হলে বাড়তি সময় চেয়ে পুনরায় আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে নভেম্বর পর্যন্ত তাদের সময় দেয়া হয়। কিন্তু এরপরও কাজ শেষ নাহলে পুনরায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মা মুনতা এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো. আজিজকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি।
উপজেলা প্রকৌশলী শফিকুল আহসান জানান, প্রকল্পটির বিষয়ে আমরা অবগত। আমরাও বারবার খোঁজ নিচ্ছি। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতায় কাজটি শেষ করা যাচ্ছে না। সর্বশেষ জুন মাস পর্যন্ত সময় বর্ধিত করা হয়েছে। এর মধ্যে কাজ শেষ না করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হবে।