মুন্সিগঞ্জ, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে বসতঘরে আটকে রেখে এক যুবতীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করার চেষ্টা ও মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিবাহিত এক যুবকের বিরুদ্ধে। এসময় ঢাকা থেকে গর্ভপাত করতে আসা টিমের এক নারী সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার যুবতীর নাম দীপা বেগম (৩০)। আটক নারী হচ্ছেন আম্বিয়া (৪২)।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে বিবাহিত রিপন শেখ ৪ দিন আগে ঢাকার মিরপুর থেকে দীপা নামে ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এসময় তার স্ত্রী তানিয়া বেগম ওই নারীর পরিচয় জানতে চাইলে রিপন জানান ওই নারী তার পরকীয়া প্রেমিকা এবং সে ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিয়ের জন্য চাপাচাপি করার কারনে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন তিনি।
পরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে ঢাকা থেকে একটি টিম নিয়ে আসেন রিপন। এসময় দীপাকে হাতুড়ি পেটা করে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। আশপাশের লোকজন ডাক-চিৎকারে ছুটে আসে ওই নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
গর্ভপাত ঘটানোর টিমের আম্বিয়া নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রিপন শেখ পালিয়ে যায়।
রিপনের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী রিপন ওই নারীকে ঘরে আটকে রেখে অজ্ঞাত ২ নারীর সহযোগিতায় জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে হাতুরি পেটা করে।
প্রতিবেশী মো. মামুন জানান, রিপন স্ত্রী পরিচয়ে যে নারীকে বাড়িতে নিয়ে আসে সে ২ মাসের গর্ভবতী। রিপন লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক তার গর্ভপাতের চেষ্টার পাশাপাশি অমানবিক নির্যাতন করেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. কাশফি জানান, নির্যাতনের কারনে ওই নারী স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারছেন না। তার হাত-পায়ের হাড় ভাঙ্গা। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসিন মুন্সী বলেন, ভুক্তভোগী নারীর স্বজনদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।