মুন্সিগঞ্জ, ৮ জানুয়ারি ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের ‘গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজ’ এর অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে আটক করে ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আটক মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা (৫৩) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ললাটি গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। তিনি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন বলে জানা গেছে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজ অভ্যন্তরে অবস্থানকালে ওই শিক্ষককে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘হোসেন্দী ইউনিয়নে চর বলাকী গ্রামে ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর মামলায় আটক দেখিয়ে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না’।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলেজের অধ্যক্ষের পদ নিয়ে গ্রেপ্তারকৃত মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার সাথে স্থানীয় একটি পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজ পরিচালনার জন্য অস্থায়ী এডহক কমিটি ২০২৪ সালের অক্টোবরে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়। সেই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন অধ্যক্ষ। শুনানি শেষে আদালত সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে বহিষ্কারের পন্থা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার দায়িত্ব পালনে কোন বাঁধা না থাকলেও স্থানীয় একটি পক্ষ তাকে কলেজ প্রবেশে বাঁধা দিচ্ছিলেন বলে জানা যায়।
অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষক মানুষ আমি যাব কার্যালয় ভাঙচুর করতে! আমি সোনারগাঁও উপজেলার যে এলাকায় বসবাস করি সেখান থেকে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করতে চর বলাকী গিয়েছি বিষয়টা হাস্যকর। আমার জীবনে আমি কোনদিন ওই গ্রামে যাইনি। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।’
চর বলাকী এলাকায় অবস্থিত ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর মামলার বাদী মো. মাহফুজ বলেন, ‘আমি অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে চিনি না। পুলিশের সাথে হয়তো কোন সমস্যা করেছে সেজন্য পুলিশ তাকে এই মামলায় আটক দেখিয়েছে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর চর বলাকী গ্রামে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কর্মীরা। সেখানে বহিরাগত কেউ ছিলনা’।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘একটি মামলায় তাকে আটক দেখানো হয়েছে এটা জানি।’ মামলার বাদী কেন আসামিকে চিনে না? এই প্রশ্ন করা হলে তিনি তা এড়িয়ে যান।