১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | বিকাল ৩:২৩
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনে পুলিশকে মারধরের ভিডিও করায় সাংবাদিকের উপর হামলা
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৮ মে ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যকে মারধর করছিলো আনারস প্রতীকের সমর্থক ও ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু এবং তার লোকজন। সে ঘটনার ছবি তুলছিলেন মানবজমিনের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেন।

এতে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকের মোবাইফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে আহত করে সাংবাদিককে। সেই সঙ্গে ওই কেন্দ্রের ভেতরে থাকা অন্তত ৭ জন সাংবাদিককে প্রায় ৩০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

বুধবার সকাল সোয়া ৯ টার দিকে উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের ভবানিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসব ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার সাংবাদিক গোলজার হোসেন মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি।

মনিরুল হক মিঠু হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। মারধরের ঘটনায় নেতৃত্বে ছিলেন চেয়ারম্যানের ভাতিজা তানভীর হক তুরিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটকেন্দ্রের বাইরে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল হকের সমর্থক মনিরুল হক মিঠু তার লোকজন নিয়ে জড়ো হচ্ছিলো। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার শঙ্কায় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশ সদস্য মো. সোহেল সবাইকে সরে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় মিঠু ও তার লোকজন। ঘটনাটির পাশ থেকে ছবি এবং ভিডিও করছিলেন ওই সাংবাদিক। পরে পুলিশকে রেখে সাংবাদিকের ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মারধর করতে থাকেন মিঠু ও তার লোকজন। পরবর্তীতে অন্যান্য সাংবাদিকরা এসে সাংবাদিককে উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে একাধিক সাংবাদিক ভোট কেন্দ্রের ভেতরে আশ্রয় নিলে পুলিশের উপস্থিতিতেই তাদের মারধর করতে তেরে আসেন ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু, তার ভাতিজা তুরিনসহ অন্যান্য লোকজন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক দৈনিক মানবজমিনের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেন বলেন, ভোটকেন্দ্রের পাশে পুলিশকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে মারধর করছিলো চেয়ারম্যান মিঠুরা। সে ঘটনার ছবি ও ভিডিও করায় আমাকের শার্টের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি দোকানের ভেতর ঢুকিয়ে মারধর করা হয়। এসময় আমার হাতে থাকা ফোন ছিনিয়ে নিয়ে সব ছবি, ভিডিও মুছে দিয়ে ফোনটি ভেঙে ফেলা হয়।

মারধরের শিকার পুলিশ সদস্য কনস্টেবল মো. সোহেল রানা বলেন, কেন্দ্রের পাশে একটি দোকান ছিল। সেখানে আনারস প্রতীকের সর্মথকরা জড়ো হচ্ছিল। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে আমি তাদেরকে সরে যেতে বলি। সে সময় আনারসের সমর্থকরা আমার উপর হামলা চালায়। সাংবাদিক ছবি তোলায় তাকেও মারধর করে তারা।

একপর্যায়ে মারধরের ঘটনার পর কেন্দ্রের ভেতরে মনিরুল হক মিঠু লোকজন নিয়ে প্রবেশ করে সাংবাদিকদের হাত কেটে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন। দু’চারজন সাংবাদিক মেরে ফেললে কি হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন মিঠু। সে ঘটনা ভিডিও করতে গেলে দ্বিতীয় দফায় মাইটিভি ও প্রথম আলোর সাংবাদিককের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন মিঠু ও তার লোকজন।

ভুক্তভোগী আরেক সাংবাদিক শেখ মোহাম্মাদ রতন বলেন, সাংবাদিক গোলজারকে মারধরের পর ৩০ মিনিটের মত কেন্দ্রের ভেতর আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। আমরা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। তারা চুপ করে দারিয়ে ছিল।বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের উর্ধ্বতনদের জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এতে আমরা হতভম্ব হয়েছি।

কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রতন বৈরাগীর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা এড়িয়ে যান। আপনাদের উপস্থিতিতে এত ঘটনার পরও কেন ন্যুনতম ব্যবস্থা নিলেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন,  ‘এখানে কিছুই হয়নি। সব ঠিক আছে। এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে পারবো না।’

মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার আসলাম খান বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে’।

error: দুঃখিত!