মুন্সিগঞ্জ, ২১ নভেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
গত ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে মানিকপুর এলাকায় বা পায়ে গুলিবিদ্ধ হন ভিক্ষুক আয়েশা বেগম (৭৬)।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা অবহেলায় সেসময় বিষয়টি ধরা না পড়লেও ঘটনার ৩ মাস পর গত ১৭ নভেম্বর এক্সরে পরীক্ষায় দেখা যায়- ওই নারীর পায়ে এখনো বুলেট রয়ে গেছে।
পরদিন ১৮ নভেম্বর দুই যুবক ওই নারীকে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবে নিয়ে আসলে সাংবাদিকরা তাকে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠায়।
সেখানে তার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দুইদিন পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তারা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই নারীর চিকিৎসার বিষয়টি জানতে চাইলে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জসীমউদ্দীন ভূইয়া জানান, ওই নারীর চিকিৎসার ব্যবস্থা সিভিল সার্জন কার্যালয় করতে পারবে না। তার নিজেরই নিজের চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে যেতে পারে, অথবা ঢাকায় যোগাযোগ করতে পারে।
তবে ভিক্ষুক আয়েশা বলেন, ‘আমার ভাই-স্বজন, স্বামী-সন্তান কেউ নেই। আমাকে ঢাকায় কে নিয়ে যাবে। পায়ের ব্যাথা নিয়া সরকারি অফিসে অফিসে ঘুরতাছি, কেউ আমার দায়িত্ব নেয় না। শরীর দিন দিন শুকাইয়া আসতাছে। আমি মরলে পরে কি তারা জানাজা দিতে আসবে?’
জানা যায়, গত ৪ আগষ্ট সকালে মানিকপুর এলাকার নিজ ভাড়া বাসা থেকে বের হন আয়েশা বেগম। ভিক্ষা করার উদ্দেশ্যে ওই এলাকার ২৫০ শয্যা মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়কে আসেন। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে যান। এসময় তিনি বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাৎক্ষণিক ছুটে যান হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন তাকে। তবে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন-এমনটি তখন বুঝতেই পারেননি আয়েশা বেগম।
সম্প্রতি পায়ে তীব্র ব্যাথা অনুভূত হয় তার। কিছুদিন আগে শহরের থানারপুল এলাকার বেসরকারি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে এক্সরে করেন। এতে তার বাম পায়ে গুলি চিহ্নিত হয়।
আয়েশা বেগমের স্বামী ও সন্তান কেউ-ই নেই। বাড়ি চাঁদপুরে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে স্বামী লতিফ সরদারের মৃত্যুর পর প্রায় এক যুগ আগে মুন্সিগঞ্জ শহরে চলে আসেন তিনি। বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। স্বামী-সন্তান ছাড়া বয়সের ভারে ন্যুব্জ আয়েশা বেগমকে পায়ে বুলেট নিয়েই প্রতিদিন ভিক্ষা করতে বের হতে হচ্ছে। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চিকিৎসা নিয়ে।
আয়েশা বেগমের সাথে সরাসরি যোগাযোগের নাম্বার- +8801623375636