মুন্সিগঞ্জে সড়ক বিভাগাধীনে ঝুঁকিপূর্ণ ২১টি সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ ছাড়া স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নিরাপদ ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা। একনেক সভায় অনুমোদন পেলে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় মুন্সিগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীন ৮৭টি ক্ষতিগ্রস্থ বেইলী সেতু রয়েছে। এই ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝকিপূর্ণ সেতুগুলোর জন্য সিরাজদীখান, শ্রীনগর এবং টংগীবাড়ী উপজেলার ৫২ লাখ ২৪ হাজার মানুষের ঢাকায় যাতায়াত করতে অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হয়। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাট-বাজার, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, উপজেলা পরিষদ এবং অনেক পাবলিক প্রতিষ্ঠান উল্লিখিত সড়কগুলোর উভয়পাশে অবস্থিত।
সেতুগুলো নির্মিত হলে এই এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর, নিরাপদ এবং ব্যয় সাশ্রয়ীসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে। এ প্রেক্ষিতে এই ৮৭টি বেইলি ব্রীজের মধ্যে জাইকা কর্তৃক পরিচালিত জরিপে ডি শ্রেণীভূক্ত ব্রীজ হতে ১০টি এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ চিহ্নিত অন্য ১১টি ব্রীজসহ মোট ২১টি ঝুকিপূর্ণ বেইলী বা আরসিসি সেতু প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পে অন্তভুক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় সড়কওয়ারী সেতু গুলো হচ্ছে: জিনজিরা-কেরানীগঞ্জ-নওয়াবগঞ্জ-দোহার-শ্রীনগর। কেরানীগঞ্জ-হাসাড়া-বিরটারা-সিংপাড়া-কাজলপুর-নাগেরহাট সড়ক। মুন্সিগঞ্জ (হাতিমাড়া)-কুনদেও বাজার-শ্রীনগর (সানবাড়ী) সড়ক। নিমতলী-সিরাজদীখান-কাকালদী সড়ক। ফতুল্লা-মুন্সিগঞ্জ-লৌহজং-মাওয়া সড়ক এবং রিকাবীবাজার-রামপাল-ডিঘীরনগর-বাংলাবাজার-মুন্সিগঞ্জ সড়ক ইত্যাদি।
সূত্র জানায়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে ১৬০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের উপর ২০১৬ সালের ৫ মে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এই সভার সিদ্ধান্তে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে। ডিপিপি অনুসারে প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১৪৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, ২ দশমিক ৫৩ লাখ ঘন মিটার মাটির কাজ, ৭৩৯ দশমিক ৯৪ মিটার কংক্রিট ব্রিজ নির্মাণ ২১টি, ৩৩০ মিটার ডাইভারশনে বেইলী ব্রীজ নির্মাণ, ১ দশমিক ৩১ কিলোমিটার ব্রীজ এ্যাপোচ নির্মাণ, ১ দশমিক ৩১ কিলোমিটার সার্ফেসিং, ১দশমিক ৫৩ কিলোমিটার ডাইভারশন সড়ক নির্মাণ, ৫ হাজার ৭৯২ মিটার ক্রস ড্রেন ও সার্ফেস ড্রেন নির্মাণ, ১৫ হাজার ৮৭৩ বর্গমিটার রক্ষাপ্রদ কাজে জিও টেক্সটাইলসহ আরসিসি স্লোপ এবং ইউটিলিটি অপসারণসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য খোরশেদ আলম চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মুন্সিগঞ্জ জেলার বিদ্যমান সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নততর হবে এবং প্রকল্প এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।