২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ১০:১৮
বাংলাদেশ ফুটবলের জার্সিতেও লজ্জাজনক অনিয়ম!
খবরটি শেয়ার করুন:

গত জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে সর্বশেষ নামবিহীন নতুন জার্সি পেয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। তখন জাতীয় দলে যেসব ফুটবলার ছিলেন তাদের মাপেই মালয়েশিয়া থেকে আনা হয়েছিলো দুই সেট জার্সি। সেই জার্সিতেই এখনও খেলে চলছে জাতীয় দল।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ৭ নাম্বার জার্সি পরে খেলেছিলেন উইংগার জাহিদ হোসেন। ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের বিপক্ষে ছিলেন না এ ফুটবলার। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে দলে থাকলেও মাঠে নামা হয়নি তার। এই তিন ম্যাচে তার স্থানে ৭ নাম্বার জার্সিতে খেলানো হয় স্ট্রাইকার এনামুল হককে।

কিন্তু, জাহিদের শরীরের গড়ন আর এনামুলের শরীরের গড়ন এক নয়। শরীরের গড়নে মিল না থাকায় জাহিদের জার্সিতে এনামুলকে খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে, যা চোখ এড়ায়নি অস্ট্রেলিয়ার এক ধারাভাষ্যকারের। নাসির, ইয়ামিন, মিশুর বেলায়ও ঘটছে একই ঘটনা। এরাও খেলছেন অন্যের জার্সি গায়ে চাপিয়ে।

জার্সিতে নাম না থাকার সুবিধা নিয়ে একজনের জার্সিতে আরেকজনকে খেলাতে পারছে বাফুফে। জানুয়ারি থেকে দুই সেট জার্সিতে ১৪ ম্যাচ খেলেছে জাতীয় দল ও অনূর্ধ্ব-২৩ দল। প্রতিটি টুর্নামেন্ট শেষে ফুটবলারদের কাছ থেকে জার্সি নিয়ে নেয় বাফুফে। এগুলো পরিষ্কার করে রাখা হতো পরবর্তী টুর্নামেন্টের জন্য। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও নামবিহীন জার্সি পরেই মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। বিষয়টিতে অন্যদের চোখ না পড়লেও চোখে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমের।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার একতরফা ম্যাচ নিয়ে সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে লেখা হয়েছিলো, ‘বিশ্বের ১৭৩ নম্বর দলের কাছ থেকে আপনারা আর কী আশা করেছিলেন? ওদের তো লাল-সবুজ জার্সিতে নাম পর্যন্ত ছিল না।’

বাফুফের এমন আচরণে ক্ষোভের ঝড় বইছে চারদিকে। এ নিয়ে নানারকম প্রশ্ন তুলছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমও। ফুটবল দলের বিদেশ সফর হলে সেখানে কর্মকর্তাদের হিড়িক পড়ে। যে দেশের কর্মকর্তারা কথায় কথায় ফিফা-এএফসি’র বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন, মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বিদেশী কোচ পুষতে পারেন, সে দেশের জাতীয় দলের জার্সি নিয়ে এমন কেলেঙ্কারি কোনভাবেই ক্ষমা করা যায় না বলেই মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক।

তার মতে, জার্সি নিয়ে বিদেশী গণমাধ্যমে যে সমালোচনা হয়েছে এজন্য জাতির কাছে বাফুফে কর্তাব্যক্তিদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফুটবলারও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে এক ফুটবলার দর্শকদের উদ্দেশে তার জার্সিটি ছুড়ে মেরেছিলেন গ্যালারিতে। এই অপরাধে তাকে অনেক কথা শুনতে হয়েছিল। এর চেয়ে আমাদের লজ্জার আর কী হতে পারে?

তবে আশু এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক। জার্সি নিয়ে নানা সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও লজ্জিত। এটা বড় ধরনের ভুল। আশা রাখি সামনে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।’

সূত্র: মানবজমিন

error: দুঃখিত!