গওহর জামিল বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী ও জাগো আর্ট সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। তার পূর্বনাম ছিল গণেশচন্দ্র নাগ। ১৯৫২ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম নেন গওহর জামিল।
১৯২৭ সালে বিক্রমপুর বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান গ্রামের বিখ্যাত নাগ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
মাত্র আট বছর বয়সে বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী কালু নায়েরের শিকারী নৃত্য দেখে গওহর জামিল শিল্পী হতে উদ্ধুদ্ধ হন এবং ১৯৩৫ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ভাস্কর দেব, রবিশংকর, উদয় শংকর, বুলবুল চৌধুরীর নিকট নৃত্য শিখেন। ১৯৬২ সাকে ভারতের মারুথাপার পিনাই ও রামনারায়ণ মিশ্রের নিকট ভারত নাট্যম ও কথ্যক নৃত্যে পাঠ নেন।
১৯৫০ সালে সাংস্কৃতিক সংস্থা কলা ভবন ও ১৯৫৯ সালে জাগো আর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫২ সালে প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী রওশন জামিলকে বিয়ে করেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
গওহর জামিল বহু নৃত্যনাট্য রচনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য নৃত্যনাট্যের মধ্যে রয়েছে ‘সামান্য ক্ষতি’, ‘আনারকলি’, ‘বিচার’, ‘কাঞ্চনমালা’, ‘ইতিহাসের একটি পাতা’, ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ ইত্যাদি। তাঁর কয়েকটি জনপ্রিয় খন্ডনৃত্যের মধ্যে রয়েছে ‘ঝুমুর’, ‘কৃষাণ-কৃষাণি’, ‘জেলে’, ‘সাপুড়ে’ এবং ‘নবান্ন’। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন।
এ উপলক্ষে তিনি রাশিয়া, চীন, হংকং, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশে নৃত্য পরিবেশন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকালে তিনি সেখানকার বিভিন্ন সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। তিনি চলচ্চিত্রের নৃত্যপরিচালক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন।
১৯৮০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সড়ক দূর্ঘটনায় ৫২ বছর বয়সে নিহত হন।