বাঁচার জন্য রাস্তায় রাস্তায় কাগজ কুড়াতেন তিনি। কাজ করেছেন পৌর কর্তৃপক্ষের ঝাড়ুদার হিসেবেও। ১৯৮১ সালে তাঁর মাসিক উপার্জন ছিল প্রায় ৩০০ টাকা। আজ তাঁর বার্ষিক আয় এক কোটি ২৫ লাখ টাকা। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনের সূত্রে বলা হচ্ছে ভারতের গুজরাট রাজ্যের মঞ্জুলা বাঘেলার কথা।
১৯৮৩ সালে ঝাড়ুদারদের নিয়েই একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছিলেন তিনি। নাম দিয়েছিলেন ‘শ্রী সৌন্দর্য সাফাই উৎকর্ষ মহিলা সেবা সখারি মণ্ডলী লিমিটেড’। যে প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো পণ্য বিক্রি করা হয় না। বরং সরবরাহ করা হয় সেবা। বিভিন্ন নামিদামি বহুজাতিক সংস্থা‚ আবাসন প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কারের জন্য এবং ঘরের কাজের জন্য কর্মী সরবরাহ করে সংস্থাটি। ৬০ বছর বয়সী মঞ্জুলা জানান, বর্তমানে প্রতিষ্ঠান‚ আবাসন মিলিয়ে মোট ৪৫টি জায়গায় কর্মী জোগান দেয় এই প্রতিষ্ঠান।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মঞ্জুলা আরো জানান, শুরুতে কো-অপারেটিভ এ সংস্থার সদস্য ছিলেন ৪০ জন। এখন সেই সংখ্যা পৌঁছেছে চার হাজারে। এর বেশির ভাগ সদস্যই একসময় হয় কাগজ কুড়াতেন অথবা পৌর কর্তৃপক্ষের ঝাড়ুদারের কাজ করতেন। আর এখন তাঁদের হাতে শোভা পায় ঘর ও অফিস পরিষ্কারের বিভিন্ন উন্নত যন্ত্রপাতি। ঘর পরিষ্কারের ছোটখাটো যন্ত্রের পাশাপাশি রাস্তা পরিষ্কারের জন্য রোড ক্লিনার‚ ভ্যাকুয়াম ক্লিনার‚ মপারের মতো যন্ত্র ব্যবহারে দক্ষ করা হয়েছে এই নারীদের। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়েও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন মঞ্জুলার সংস্থার কর্মীরা।
মঞ্জুলা জানান, এই সংস্থা একদিনে গড়ে ওঠেনি। আস্তে আস্তে শুরু করে এই সংস্থাটি এখন গুজরাট, আহমেদাবাদ এমনটি দিল্লির মানুষের ঘরের কাজের সহযোগী জোগান দিয়ে চলছে। তিনিই এখন এই সংস্থার প্রধান। তাঁর দেখাদেখি আরো অনেকে এই উদ্যোগ নিয়েছে। এদিকে মঞ্জুলার উদ্যোগের বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ টাকায়।
এত সাফল্যের পরই থেমে থাকতে নারাজ ‘শ্রী সৌন্দর্য সাফাই উৎকর্ষ মহিলা সেবা সখারি মণ্ডলীর’ সদস্যরা । জীবনের সঙ্গে বহু যুদ্ধ করে সাফল্যের দেখা পাওয়া এই লড়াকু নারীরা যেতে চান আরো বহুদূর।