৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | রাত ৮:৩৩
জেলা পর্যায়ে শীর্ষে মুন্সীগঞ্জ: জেএসসিতে পাসের হার ৯২.৩১, প্রাথমিকে ৯৮.৫২%
খবরটি শেয়ার করুন:

সারা দেশে গতকাল ২০১৫ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর জেএসসি ও জেডিসিতে সম্মিলিত পাসের হার ৯২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতবার এ সংখ্যা ছিল ৯০ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫২ শতাংশ ও ইবতেদায়ি সমাপনীতে পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় প্রাথমিকে পাসের হার শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বাড়লেও ইবতেদায়িতে শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ কমেছে। ২০১৪ সালে প্রাথমিকে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ৯২ ও ইবতেদায়িতে ৯৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী বেলা দেড়টায় সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে জেএসসি-জেডিসির ফল ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন।

এবার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় সব সূচকে ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ বছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় মোট ২২ লাখ ৭২ হাজার ২৮৯ জন অংশ নিয়েছে। পাস করেছে ২০ লাখ ৯৮ হাজার ৮২ জন। জেএসসিতে ১৯ লাখ ২৯ হাজার ৯৯ জনের মধ্যে পাস করেছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৭০ পরীক্ষার্থী। জেডিসিতে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ১৯০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩১২ জন।

প্রকাশিত ফলাফলের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত জেএসসিতে পাসের হার ৯২ দশমিক ৩১ ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত জেডিসিতে এ হার ৯২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। দুটি পরীক্ষায় মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৩ পরীক্ষার্থী। গত বছর জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৩৫ জন।

এদিকে তিন বছর ধরে শীর্ষে থাকা বরিশাল বোর্ডকে পেছনে ফেলে এবার জেএসসিতে সেরা হয়েছে রাজশাহী বোর্ড। রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত তিন বছরের মতো যথারীতি সবার নিচে রয়েছে চট্টগ্রাম বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য বোর্ডের মধ্যে ঢাকায় পাসের হার ৯০ দশমিক ৩৯, বরিশালে ৯৭ দশমিক ২৬, কুমিল্লায় ৯২ দশমিক ৫১, যশোরে ৯৫ দশমিক ৪৪, সিলেটে ৯৩ দশমিক ৫৯ ও দিনাজপুরে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

এদিকে সচিবালয়ে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। এর আগে সকালে তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন।

এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫২ ও ইবতেদায়ি সমাপনীতে পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৪৫৩ জন। এর মধ্যে প্রাথমিকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮০ জন ও ইবতেদায়িতে ৫ হাজার ৪৭৩ জন।

এ দুই সমাপনী পরীক্ষায় ৩১ লাখ তিন হাজার ৩৭২ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে পাস করেছে ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪০ জন। প্রাথমিকে পরীক্ষার্থী ছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৩৮ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ২৭৪ জন। আর ইবতেদায়িতে অংশ নিয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৪ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ২৬৬ জন।

প্রাথমিকে পাসের হারের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে রাজশাহী বিভাগ। এ বিভাগে পাসের হার ৯৯ শতাংশ। এছাড়া পাসের হার বরিশালে ৯৮ দশমিক ৩০, খুলনায় ৯৮ দশমিক ৯৭, ঢাকায় ৯৮ দশমিক ৭৪, চট্টগ্রামে ৯৮ দশমিক ৪১, সিলেটে ৯৬ দশমিক ৭৯ ও রংপুরে ৯৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এছাড়া শতভাগ পাসের হার নিয়ে জেলা পর্যায়ে শীর্ষে মুন্সীগঞ্জ। এ বছর সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট বিভাগে ৯৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

এদিকে ইবতেদায়িতেও পাসের হারে সেরা রাজশাহী। এ বিভাগে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এছাড়া বরিশালে ৯৭ দশমিক ৮৫, খুলনায় ৯৬ দশমিক ২২, ঢাকায় ৯৪ দশমিক ২১, চট্টগ্রামে ৯৩ দশমিক ৯৩, সিলেটে ৯০ দশমিক ১ ও রংপুরে ৯৭ দশমিক ২১ শতাংশ। এ বছর জেএসসি, জেডিসি ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে বোর্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়নি। উল্লেখ্য, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা গত ১ নভেম্বর শুরু হয়। শেষ হয় ১৮ নভেম্বর।

error: দুঃখিত!