হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মানহানিকর ছবি ও বিভ্রান্তকর তথ্য পোস্ট করায় নৌবাহিনী সদস্য (অবসর) মাহবুব খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে বানিয়াচং থানা পুলিশ মাহবুব খানকে গ্রেফতার করে। সে উপজেলা সদরের সাগরদীঘির পূর্বপাড় এলাকার ফারুক খানের ছেলে। এ সময় মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা নিয়ামূল খান মাসুদ পালিয়ে যান। গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্বে দেন থানার অফিসার ইনচার্জ নির্মলেন্দু চক্রবর্তী ও এসআই আরিফুর রহমানসহ একদল পুলিশ। বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত মাহবুবকে হবিগঞ্জ কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এমপি আবদুল মজিদ খানের পিএস সেলিম উদ্দিন বাদী হয়ে বুধবার বানিয়াচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধনী) ২০১৩ এর ধারায় দায়েরকৃত মামলায় প্রধান আসামি করা হয় গ্রেফতারকৃত মাহবুব খানের ভাই বিএনপি নেতা নিয়ামূল খান মাসুদ। এছাড়া এজাহারনামীয় ৫ জন সহ ফেসবুকে পোস্টকৃত এমপির মানহানিকর ছবির নিচে যেসব ব্যক্তি লাইক ও নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন মামলার আসামির তালিকায় তারাও রয়েছেন। এজাহারনামীয় অন্য ৪ আসামি হল আলমগীর খান, আলমগীর দেওয়ান, সোহেল আহমেদ ও আমিনুল ইসলাম বাবুল।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ‘মুজিবসেনা’, ‘গজব আসছে’, লীলারাম,’ এসব নামে ফেসবুকে ফেইক আইডি খুলে এমপি মজিদ খানকে নিয়ে সম্প্রতি মানহানিকর ও বিভ্রান্তমূলক ছবি ও তথ্য উপস্থাপন করে জনগণের মধ্যে এমপি মজিদ খানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে আসছে একটি মহল। দীর্ঘদিন ধরে এমপির বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালালেও এমপি আবদুল মজিদ খান এতে পাত্তা দেননি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও বিভিন্ন সময় ব্যাঙ্গাত্বক ছবি পোস্ট করেছে এসব আইডির এডমিনরা।
সর্বশেষ গত সোমবার আজমিরীগঞ্জের জলসুখা ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজ মিয়ার ভাতিজার বৌভাত অনুষ্ঠানের বর ও কনের একটি ছবিকে ফটোশপে কাট করে ‘মুজিবসেনা’ আইডি থেকে মানহানিকর ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হয়। এমপি আবদুল মজিদ খানের ছবির সঙ্গে অশ্লিল ও বিভ্রান্তকর তথ্যও পোস্ট দেয় আইডির এডমিন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে বিষয়টি নজরে পরে এমপি আবদুল মজিদ খানসহ প্রশাসনের।
বানিয়াচং থানার ওসি নির্মলেন্দু চক্রবর্তী জানান, ‘মুজিবসেনা’ আইডির এডমিন নিয়ামুল খান মাসুদ নামে এক ব্যক্তি প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। মাসুদ খানের ভাই আটক মাহবুব খানও এর সঙ্গে জড়িত। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাবে না। তবে অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মানহানিকর ছবির নিচে যারা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন ও লাইক দিয়ে সমর্থন যুগিয়েছেন মামলায় আসামির তালিকায় তারাও রয়েছেন।