৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ১:০৮
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুন্সিগঞ্জের প্রাণ দিয়েছেন ১৫ জন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে মুন্সিগঞ্জের ১৫ জন বাসিন্দা প্রাণ দিয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জন ঢাকায় ও ৩ জন মারা গেছেন গত ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেট এলাকায়।

সর্বশেষ ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট থানা, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়, পরিবার ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এর বাইরেও নিহত ব্যক্তি থাকতে পারেন।

খোঁজ পাওয়া নিহতদের মধ্যে ৫ জন শিক্ষার্থী, ৪ জন দিনমজুর শ্রমিক, ৩ জন বেসরকারি চাকুরিজীবি, একজন প্রবাসী ও দুইজন ব্যবসায়ী। এরা সবাই বুক, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

গেল ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেটে আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের প্রতিরোধের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ৩ জন। তারা হলেন- আলী আকবর মোল্লার পুত্র শ্রমিক সজল মোল্লা (৩১), মতিন ফরাজীর পুত্র শ্রমিক রিয়াজুল ফরাজী (৩৮) ও সিরাজ সরদারের পুত্র শ্রমিক নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজল (২২)। এরা সকলেই মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।

গুলি-হামলার মুখে বুক পেতে দাঁড়ানো মুন্সিগঞ্জের সজল মোল্লা। ৪ তারিখ শহরের সুপারমার্কেট আন্দোলনে নিহত হন তিনি।

গত ১৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিহত হন মুন্সিগঞ্জের ১৫ জন বাসিন্দা।

৫ আগস্ট সরকার পতনের মাত্র দুই ঘন্টা আগে দুপুর একটার দিকে ঢাকার চানখারপুল এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার রামগোপালপুর এলাকার বাসিন্দা, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ও নারায়ণগঞ্জের তোলারাম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শারিক চৌধুরী মানিক (২৯)।

৫ আগস্ট যাত্রাবাড়িতে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শ্রীনগর উপজেলার শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের সেলামতি গ্রামের মো. সোনা মিয়ার পুত্র মো. আক্কাস আলী (৪৪)। তিনি ঢাকার কদমতলী থানার উত্তর মুরাদপুর এলাকায় বসবাস করে বেসরকারি চাকরি করতেন।

১৮ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন লৌহজং উপজেলার ঘোড়দৌড় এলাকার লাল মিয়ার পুত্র কাপড় ব্যবসায়ী মো. সোহেল রানা (৩৭)। তিনি ঢাকার রায়েরবাগ এলাকার বাসিন্দা। প্রথম দিকে বেওয়ারিশ হিসাবে সোহেলে মরদেহ দাফন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। পরে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় পরিবার।

১৯ জুলাই ঢাকার কদমতলি থানার সামনে গুলিব্ধি হয়ে নিহত হন লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের বেপারি বাড়ি এলাকার মো. জাহাঙ্গীর হাসানের পুত্র মো. মাহাদী হাসান প্রান্ত (১৮)। তিনি সরকারি তোলারাম কলেজের এইচএসসি শিক্ষার্থী ছিলেন।

১৯ জুলাই ঢাকার রামপুরা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সিরাজদিখান উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের মধ্যপাড়া বাজার এলাকার মনিরুজ্জামান তাজল কালের পুত্র, রাজধানী আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থী মোস্তফা জামান সমুদ্র (১৭)।

১৯ জুলাই ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের উত্তর কোলাপাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের পুত্র শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম শোভন (১৯)।

১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত হন শ্রীনগর উপজেলার শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের নতুন মত্তগ্রাম এলাকার আইয়ুব খলিফার পুত্র, বেসরকারি চাকরিজীবি ও অভিনেত্রী তানজিন তিশার সাবেক সহকারি আল-আমিন খলিফা (১৮)।

ঢাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে নিহত হন অভিনেত্রী তানজিন তিশার সাবেক সহকারি আল-আমিন খলিফা। 

১৯ জুলাই ঢাকার আফতাবনগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের মৌছা এলাকার মো. চান মিয়ার পুত্র বেসরকারি চাকরিজীবী মো. রাকিব হোসেন (২১)।

২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া এলাকার মো. সানাউল্লাহর পুত্র ও গজারিয়া ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান (২০)।

২১ জুলাই ঢাকার কদমতলী এলাকায় আসরের নামায পড়তে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের করিম খা এলাকার মৃত মান্নান সরকারের পুত্র সৌদি আরব প্রবাসী মুজিবুর রহমান সরকার (৫৫)।

২৮ জুলাই ঢাকা রামপুরার পলাশবাগ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন লৌহজং উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়নের মৃত জাবেদ আলীর পুত্র দিনমজুর মো. বাবুল হাওলাদার (৫২)। তিনি ঢাকার রামপুরা এলাকায় বসবাস করতেন।

৪ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মুন্সিগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের সুখবাসপুর এলাকার সুলতান শেখের পুত্র ব্যবসায়ী মো. ফরিদ শেখ (২৯)।

error: দুঃখিত!