মুক্তিযোদ্ধাদের ট্যাক্স মওকুফের সনদ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ঘোষিত সনদ নেবেন না বলেন জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) একে এম সেলিম ওসমান।
শনিবার বিকেলে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের কমিউনিটি সেন্টারে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করে সিটি মেয়রের তাদের বাড়ির ট্যাক্স মওকুফের সনদ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদেরও প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান সেলিম ওসমান।
সেলিম ওসমান নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সিটি মেয়র আইভীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বসা উচিৎ। সিটি করপোরেশন যদি তাদের আয় থেকে দুই কিংবা তিন শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে দান করেন তাহলে সম্মান জানাবো। তার পরিবর্তে আমাদের কিছু দিতে চাইলে তা প্রত্যাখান করবো।’
আগামী ২৮ মার্চে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্যাক্স মওকুফের ঘোষনা দেয়ার বিষয় উল্লেখ করে সেলিম ওসমান বলেন, ‘২৮ মার্চ ওই সনদ নিব না। এতে করে আমার মেয়ের জামাই আগামীকাল আমার নাম দিয়ে বাড়ি করতে চাইবে কর মওকুফের সুবিধায়। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদেরও বলবো জনগণের টাকা নিয়ে যেন আমরা উপকৃত না হই। আসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের কর মওকুফ ঠিক আছে। তবে যারা অসহায় না, ট্যাক্স দেয়ার ক্ষমতা আছে, তাদের এ মওকুফের সনদ না দেয়া উচিত। আর তাদেরও এ সনদ প্রত্যাখ্যান করা উচিত।’
সেলিম ওসমান আরো বলেন, ‘অনেক বড় আফসোস মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হতে পারি নাই। আর আনন্দ সেখান থেকে গাজী হয়ে ফিরে এসেছি। নারায়ণগঞ্জ দিন দিন শান্তির দিকে যাচ্ছে। এখন আগের ভুলগুলো স্মরণ করছি। আদমজী, রেল স্টেশন, টেক্সটাইল মিলস, ৫নং ঘাট হারিয়েছি। এখন আবার নতুন করে কাজ শরু হয়েছে। বন্দরে শান্তিচর এলাকায় নিট পল্লী হবে।’
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৬ উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যার সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ড।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞার সভাপতিত্বে ডেপুটি কমান্ডার মো. নূরুল হুদার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন- জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, যুদ্ধকালীন কমান্ডার আব্দুল সাত্তার, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা উপকমিটির আহ্বায়ক মো. ছরোয়ার হোসেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সামিউল্যা মিলন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. শাহজাহান ভূইয়া জুলহাস, যুদ্ধকালীন কমান্ডার আসিনুর রহমান প্রমুখ।