মুন্সিগঞ্জ, ২ জুন, ২০২০, টংগিবাড়ী প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলায় গাছের গুড়ি বোঝাই ট্রাকসহ একটি বেইলি সেতু খালে ভেঙে পড়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুন) সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার পুরা বাজার এলাকায় ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ-দিঘিরপাড় সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সেতুটি ভেঙে পড়ায় দিঘিরপাড় ও আশপাশের এলাকার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে যাতায়াতকারী মানুষজন।
সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির মাঝের অংশ ভেঙে পানিতে পড়ে আছে। গাছের গুড়ি বোজাই ট্রাকটির পিছনের অংশও পানিতে। খালটির মধ্যে দুটি ট্রলারের উপর দিয়ে পায়ে হেটে অস্থায়ীভাবে যাওয়া-আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারের উপর দিয়ে খাল পাড় হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইউনুস জানান, সকালে সে সেতুর পাশে দাঁড়িয়েছিল। ওই ট্রাক সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় বিকট শব্দে খালের উপর ভেঙে পড়ে। তবে ট্রাকের চালক ও তার সহকারী অক্ষতাবস্থায় ট্রাকের ভিতর থেকে উঠে আসতে সক্ষম হয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ সেতুটি খুব সরু ও লক্কর-ঝক্কর মার্কা। সেতু দিয়ে ৫ টনের বেশি যাতায়াতে নিষেধ করা হলেও মজিবুর টিম্বার, আলমগীর সৈয়াল ও আল আমিন সৈয়ালদের ৩০-৪০ টনের গাছের গুড়ি বহনকারী ট্রাক প্রতিদিন যাতায়াত করে। মঙ্গলবার সকালের দিকে একটি গাছ ভর্তি ট্রাক ঢাকা হয়ে উপজেলার বেসনাল এলাকার মজিবুর টিম্বার স’মিলে যাচ্ছিলো। অতিরিক্ত মাল বোঝাই থাকায় বেইলি সেতুর মাঝামাঝি গেলে সেটা ভেঙে পড়ে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টংগিবাড়ি, শরিয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জের ২৫-৩০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। লোকজন এখন ট্রলারে করে খাল পার হচ্ছে।
এ বিষয়ে টংগিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন জানান, তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়েছে। লোকজনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সড়কটি সচল করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথের লোকজন এলাকা পরিদর্শন করেছে। সেতুর দুই পাড়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।
মুন্সিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ আলম বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ সেতুর দুইপাশেই সাইনবোর্ড লেখা ছিল যেন পাঁচটনের অধিক মালামাল নিয়ে কোন যানবাহন চলাচল না করে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঠের ব্যবসায়ীদের ৩০-৪০ টন ওজনের ট্রাক সেতু দিয়ে চলাচল করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, বেইলি সেতুর যায়গায় কংক্রিটের সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখে জানানো হয়েছে। নকশা চলে আসবে। তবে কংক্রিটের সেতু না হওয়া পর্যন্ত, সড়ক যোগাযোগ সচল রাখতে যত দ্রুত সম্ভব বেইলি সেতুটি সংস্কার করা হবে।