৯ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | রাত ৯:৩২
মুন্সিগঞ্জে ঘুমের মধ্যে তৃতীয় স্ত্রীকে খুনের দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৫ জুলাই ২০২৩,  নিজস্ব প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)

৪ বছর আগে ঘুমের মধ্যে শাবল দিয়ে কুপিয়ে তৃতীয় তম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় স্বামী মমিনুল ইসলামকে (৬০) যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অনাদায়ে এক লাখ টাকা জরিমানার রায় দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহারাত আখতার ভূঁইয়া এ রায় প্রদান করেন।

মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. জামাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বাদী ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পশ্চিম পাউসার গ্রামে মমিনুল ইসলাম তার স্ত্রী শাহানাজ পারভীনকে (৫৫) নিয়ে বসবাস করতেন। ওইদিন রাত ১০টার দিকে তুচ্ছ ঘটনায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর তারা ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু রাত ২ টার দিকে স্ত্রীকে ঘুমের মধ্যে শাবল দিয়ে মাথায় একাধিক আঘাত করে বাইরে থেকে তালা মেরে পালিয়ে যান মমিনুল।

পরদিন সকালে মমিনুল তার মেঝ ভাইয়ের স্ত্রী জিয়াসমিন বেগমকে (৫০) ফোন করে নিহতকে গুরুতর জখম করে ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছে বলে জানালে বিষয়টি জিয়াসমিন নিহতের মেয়ে আলপনা আক্তার মলিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায়। পর দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অচেতন অবস্থায় নিহতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুলতান বেপারী বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার ৪ দিন পর (২৯ এপ্রিল ২০১৯ ইং) এ ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মমিনুল।

মামলার বাদী সুলতান বেপারী বলেন, আসামী আমার বোনকে হত্যা করেছে। আদালত আজ হত্যা মামলার রায় দিয়েছে। আমি রায়ে সন্তুষ্ট।

তিনি জানান, আসামি এর আগেও ২টা বিয়ে করেছে এবং তার আগের দুই স্ত্রীকেও খুন করেছে। তবে ওই সমস্ত ঘটনায় কোন মামলা হয়নি।

বাদীর মেয়ে আলপনা আক্তার মলি বলেন, আমার বাবা আমার মাকে নৃশংসভাবে খুন করেছে। আমি ও আমার ভাই এ ব্যাপারে আদালতে সাক্ষী দিয়েছি। আমি চাই আমার বাবার সাজাটা যাতে বহাল থাকে। সে যাতে উচ্চ আদালত হতে আদেশ নিয়ে বের হয়ে না যায়। এ মামলায় সে ৫ মাস জামিনে ছিল। জামিনে গিয়ে আমাদের পরিবারকে সে অনেক নির্যাতন করেছে। আমরা তার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করেছি।

মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. জামাল হোসেন জানান, স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের রায় দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

error: দুঃখিত!