মুন্সিগঞ্জ, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ সদরের চরকেওয়ার ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফছার উদ্দিন ভূইয়া ও জেলা পরিষদ সদস্য, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি ও ইউনিয়নটির সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারউজ্জামান জীবনের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, আজ শনিবার দুপুরে সদরের মুন্সিরহাট এলাকায় প্রথম দফায় ও পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা’র দিকে হোগলাকান্দি এলাকায় দ্বিতীয় দফায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, হোগলাকান্দি এলাকার খোরশেদ ফকিরের ছেলে আয়নাল ফকির (৫২) ও তার ভাই জলিল ফকির (৪৫), একই এলাকার মিনতাজউদ্দিন এর ৩ ছেলে শাহজাহান (৪৫), মোহাম্মদ নুরু (৩৫) ও শাহাদাৎ হোসেন (৩৬), হোগলাকান্দি এলাকার আনোয়ারের ছেলে মিনহাজ (৩০) ও হোগলাকান্দি এলাকার মন্নাফ মোল্লার ছেলে আল আমিন (২৭)।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তোফাজ্জল হোসেন জানান, এ ঘটনায় দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৭জন চিকিৎসা নিতে আসেন। বেশিরভাগই ভর্তি আছেন। তাদের শরীরে মারধরের চিন্থ রয়েছে। এর মধ্যে মিনহাজের মাথায় সেলাই লেগেছে। বাকিদের অবস্থা গুরুতর নয়।
আহত মিনহাজ অভিযোগ করে বলেন, বিকালে আলুক্ষেত থেকে কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার পথে একেবারেই অতর্কিতভাবে লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আমি আক্তারুজ্জামান জীবন সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন (মোতা গাজি) এর মামাতো ভাই বলে ইউপি চেয়ারম্যান আফছু সমর্থকরা আমাকে মারধর করে।
আহত ২ ভাই আয়নাল ফকির ও জলিল ফকিরের বাবা খোরশেদ ফকির অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা’র দিকে আক্তারুজ্জামান জীবন সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন (মোতা গাজি) ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সুলতান কাজী বাবুর নেতৃত্বে ২০০-৩০০ লোক চাপাতি, হাতুড়ি নিয়ে হামলা করে। আমার এক ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী। সে রাজনীতি করে না। তাকেও তারা মারধর করেন।
আহত আল আমিন অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ৩টা’র দিকে আফছার উদ্দিন ভূইয়ার লোকজন মোটরসাইকেল মহড়া বের করে। আমি ঐ এলাকার সুলতান কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু দিয়ে বাসায় ফেরৎ আসার সময় ব্রিজের উপরে মোটরসাইকেল আটকিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আফছুর সমর্থক শাহাদাত মুন্সী, নুরুল হক মুন্সি গং আমার পথরোধ করে মারধর করতে চাইলে আমি কোল্ড স্টোরেজের টয়লেটে আশ্রয়ের জন্য গেলেও টয়লেট ভেঙে বের করে আমাকে তারা মারধর করে। কোল্ড স্টোরেজের সিসিক্যামেরায় সব দৃশ্য ধারণকৃত আছে।
সংঘর্ষ ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চরকেওয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফছার উদ্দিন ভূইয়া বলেন, আমার কোন লোকজন হামলা করেনি। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারউজ্জামান জীবন পরিকল্পিতভাবে আমার লোকজনের উপর হামলা করেছে।
জেলা পরিষদ সদস্য ও ইউনিয়নটির সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারউজ্জামান জীবন বলেন, আমি ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকায় ছিলাম। আমার লোকজনের উপর আনীত অভিযোগ মিথ্যা। ইউপি চেয়ারম্যান আফছার উদ্দিন ভূইয়া ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান সাদী মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে আমার লোকদের উপর হামলা করেছে।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুমন দেব বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে৷ থানায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।