১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ৮:২৭
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
‘আমার কাছে মনে হইলো ১০ মিনিট ছিলাম, আল্লাহ যে ক্যামনে ১২-১৩ ঘণ্টা পার কইরা দিলো বলতে পারি না’
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৩০ জুন, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া মুন্সিগঞ্জের আব্দুল্লাপুর এলাকার সুমন বেপারী (৩৫) হাসপাতালের বেডে বসে দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘লঞ্চ যখন ডোবে, তখন আমি ঘুমাচ্ছিলাম। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার সময় ঘুম ভাঙে। শুধু বুঝতে পারলাম, লঞ্চটি ধাক্কা খাইলো। আর কিছু খেয়াল নাই। কিসের মধ্যে ছিলাম আল্লাহ জানেন, তবে ভেতরে এক জায়গায় খাড়ায় ছিলাম রড ধইরা।’ দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি ছেড়ে আসে, সেসময় তিনি ইঞ্জিন রুমের সাইডে বসা ছিলেন বলেও জানান।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) সকালে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডে কথা হয় তার সঙ্গে।

এসময় সুমন ব্যাপারী জানান, মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ি উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামে তার বাড়ি। তিনি একজন ফল ব্যবসায়ী। সদরঘাটের বাদামতলী ফলের আড়তেই ব্যবসা। ব্যবসার কাজেই ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে সুমন বলেন, ‘আমার কাছে মনে হইলো ১০ মিনিট ছিলাম, আল্লাহ যে ক্যামনে ১২-১৩ ঘণ্টা পার কইরা দিলো বলতে পারি না। আমি ভেতরে কিসের মধ্যে ছিলাম, কিচ্ছু বুঝতে পারি নাই, তবে পানির তলে ছিলাম এইটুক জানি।’

সেখান থেকে বের হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ বাইর কইরা নিয়ে আসছে। বের হওয়ার সময় কিচ্ছু বুঝি নাই। বের হওয়ার পর আমারে উদ্ধার কইরা নিয়ে আসছে। পানির মধ্যে যখন ছিলাম, তখন সাঁতার কাটার ফোম দেখসিলাম চোখের সামনে, হাতরায় নিতে পারতেসিলাম না, পরে লোহার রড ধরে বসে ছিলাম।’ 

নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল কিনা জানতে চাইলে সুমন ব্যাপারী বলেন, ‘নিঃশ্বাস আল্লাহ দিসে। না দিলে তো মইরাই যাইতাম। ওপরে যখন উঠি, তখন কিছুই বুঝতে পারি নাই, ক্যামনে উঠলাম কীভাবে উঠলাম।’

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা এম এ সাত্তার সরকার জানান, সুমনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে এখনও। তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছেন, কথাবার্তা বলছেন। আমরা কিছু টেস্ট করবো, তারপর সিদ্ধান্ত নেবো।’

এর আগে, বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবির ১৩ ঘণ্টা পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি ডিরেক্টর দেবাশিষ বর্ধন সোমবার (২৯ জুন) রাতে বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি উদ্ধার হওয়া এই ব্যক্তি সম্ভবত ইঞ্জিন রুমে ছিলেন। সাধারণত ইঞ্জিন রুম এয়ারটাইট হওয়ার কারণে সেখানে পানি প্রবেশ করে না। ১০টা ১০ মিনিটের দিকে কুশন পদ্ধতি ব্যবহার করে জাহাজ ভাসানোর চেষ্টা করা হলে সম্ভবত ইঞ্জিন রুম খুলে যায়। সে সময় তিনি বের হয়ে আসেন এবং উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধার করেন।’

error: দুঃখিত!