শৈশবে স্কুল থেকে বিদায়ের মাধ্যমে শিক্ষাজীবনকে বিদায় দিয়ে খুব একটা ভুল করেননি বোধ হয় ভারতের মহারাষ্ট্রের পঙ্কজ পরখ। শিক্ষাজীবনে ব্যর্থ হলেও বাকি জীবনে যা করেছেন সেটা বোধ হয় অনেক সর্বোচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিও করতে পারেননি বা পারবেন না।
শুক্রবার নিজের ৪৫তম জন্মদিনে চার কেজি সোনা দিয়ে বানানো বিশেষ ‘শার্ট’ পরেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিক ও শিল্পপতি পরখ।
নিজের জন্মদিনে এমন বিশেষ শার্ট পরা পরখ বলেন, এই শার্ট আমার ‘বিশেষত্ব প্রকাশ’ করছে।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এক কোটি ত্রিশ লাখ রুপিরও বেশি মূল্যমানের শার্টটি পরে মুম্বাই শহর থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরের ইওলা শহরে হেঁটে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পরখ।
অবশ্য, শার্টটি পরার পর স্থানীয় জনতার পক্ষ থেকে তিনি শ্রদ্ধা ও ভক্তি পেয়েছেন বলে জানান।
পরখ বলেন, সাধারণত আমি কখনও ২-৩ কেজি ওজনের সোনার অলঙ্কার ছাড়া বাইরে যাইনি। বরাবরই আমি সোনার প্রতি আসক্ত। পাঁচ বছর বয়স থেকেই সোনায় আসক্তি শুরু হয় আমার। যে কারণে এটা খুবই যৌক্তিক আমি ৪৫তম জন্মবার্ষিকীতে সোনার তৈরিই কিছু পরিধান করবো।
পরখ আরও বলেন, ২৩ বছর আগে আমার বিয়ের সময়ও আমি খুব বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যাই। তখন সবাই বলছিল, কনের চেয়ে আমার শরীরেই বেশি স্বর্ণালঙ্কার। কিন্তু আমি এই রাজকীয় ধাতু সত্যিই অনেক পছন্দ করি।
পরখের এ বিশেষ শার্টে সাতটি খাঁটি সোনার বোতাম রয়েছে। শার্টটি তৈরি করতে মুম্বাইয়ের প্রখ্যাত শান্তি জুয়েলার্সের ২০ জন স্বর্ণকার দুই মাস ধরে ৩২০০ ঘণ্টা পরিশ্রম করেছেন।
শার্টটির বৈশিষ্ট্য হল-এটি সাধারণ শার্টের মতোই নমনীয় এবং কোমল। ওপরে স্বর্ণ থাকলেও ভেতরে পাতলা কাপড় দেওয়া হয়েছে। এটা খুব সহজে পরিষ্কারও করা যাবে এবং সাধারণ কাপড়ের মতো ঝুলিয়ে শুকানোও যাবে। শার্ট বানাতে যে সোনা ব্যবহার করা হয়েছে তারও রয়েছে আজীবন গ্যারান্টি।
স্কুল পালানোর পর ইওলাতেই পারিবারিক পোশাক কারখানার ব্যবসায় নিজেকে নিয়োজিত করেন পরখ। শিল্পপতি পরখের পরিবারে এখন রয়েছে স্ত্রী প্রতিভা এবং কলেজে পড়ুয়া দুই ছেলে সিদ্ধার্থ (২২) ও রাহুল (১৯)।
পরখ জানান, কেবল আমিই সোনার প্রতি আসক্ত, পরিবারে অন্য কারও সোনার প্রতি আকর্ষণ নেই।
বিলাসী এই স্থানীয় রাজনীতিবিদ তার সম্পদ মানুষের কল্যাণে ব্যয় করতে চান। ইতোমধ্যেই সমাজ সেবামূলক কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি রাজস্থানের উদয়পুরে অবস্থিত একটি দাতব্য হাসপাতালের ১২০ জন পোলিও রোগীর অস্ত্রোপচারের জন্য অর্থদান করেছেন।
তিনি বলেন, বছরে অন্তত এক সপ্তাহ আমি ভারতে এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে সেবামূলক কাজ করি, বিশেষত পোলিও নিয়ে। দরিদ্র রোগীদের খাবার, ওষুধ, অস্ত্রোপ্রচার-এমনকি পোশাকেরও ব্যবস্থা করি। এতে এক ধরণের আত্মিক শান্তি পাই।
এমন দামি শার্ট পরলেও ভীত নন জানিয়ে পরখ বলেন, আমি নিবন্ধিত রিভলবার সঙ্গে নিয়ে বের হই। অতএব কোনো দুর্ঘটনার ভয় নেই আমার।