মুন্সিগঞ্জ, ২৭ মে, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা টেটাযুদ্ধ বন্ধে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে পুলিশ। কয়েকদিন আগে জেলা পুলিশ সুপারের শান্তির ডাক ও কঠোর হুশিয়ারির পর এবার টেটা জমা নিয়ে ফুল উপহার দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল (২৬ মে) বিকাল ৫ টায় উপজেলার বালুচর ৭ নং বিট পুলিশিং এর আয়োজনে ইউনিয়নের চরপানিয়া হাজীবাজার এলাকায় ‘স্বেচ্ছায় টেটা/বল্লম জমাদান কর্মসুচি’ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বালুচর ইউনিয়নের ৩টি গ্রাম থেকে অন্তত ১৩’শ টেটা জমা দেওয়া হয়। স্বেচ্ছায় টেটা জমাদানকারীদের ফুল ও চকলেট উপহার দেয় পুলিশ।
কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন, সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন।
উপজেলার বালুচর ইউনিয়নে টেঁটা, বল্লম, জুইত্যা, ছুরি আর রামদার মতো ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এ যুদ্ধের ইতিহাস দীর্ঘ ৪৭ বছরের। স্বাধীনতার পর ৪৭ বছরে বালুরচরে টেঁটা/বল্লম নিয়ে কতবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে-তা সঠিক করে কেউ বলতে পারবে না। টেঁটা যুদ্ধের জেরে মারা গেছে অন্তত ১০ জনেরও বেশী। বাড়িঘর ভাঙচুর, দখল ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে অসংখ্য। গত ৫ বছরে বালুচর ইউনিয়নে টেঁটা যুদ্ধে মারা গেছে ৩ জন, থানা পুলিশ টেঁটা উদ্ধার করেছে ৮ হাজারেরও বেশী এবং মামলা হয়েছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি। ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই গড়ে উঠেছে বল্লম-টেঁটা বাহিনী।
এ সব বিরোধ নিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ থেকে শুরু করে প্রশাসনের লোকজন স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বহুবার বৈঠক ও আলোচনায় বসেও এখন পর্যন্ত কেউ কোন সুরাহা দিতে পারেনি।
কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, সিরাজদিখান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুজ্জামান, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, বালুচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন, সিরাজদিখান প্রেসক্লাব সভাপতি ইমতিয়াজ বাবুল, ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ফেরদৌস আলম। আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় শিক্ষক, ইমাম, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, এলাকার অসংখ্য গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ নারী-পুরুষ।