বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দু:খ প্রকাশ করে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সভ্য দেশ, উন্নত দেশ হয়েও খুনিদের আশ্রয় দিচ্ছে আমেরিকা-কানাডা? তাদের মতো সভ্য দেশ কেন খুনিদের সেখানে রাখছে এটা আমার জানা নেই। তাদের সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি, কিন্তু তারা কোনো সহযোগিতা করছে না। যেকোনো কারণেই হোক আমাদের সহযোগিতা করছে না এটাই হলো বাস্তবতা, এটা দেশবাসীর জানা দরকার।
বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরকালে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনি খুনিই সে যেখানেই থাকুক। তবে তারা কেন সহযোগিতা করছে না সেটা আমার জানা নেই। আমরা অনেকবার সেসব দেশের সরকারের কাছে খুনিদের ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করেছি, তারা দেয়নি। আমাদের চেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা আমেরিকা-কানাডায় আইনজীবী নিয়োগ করেছি। আমাদের আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ইন্টারপোলে এদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা আছে। সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৯৬ সালে কমিটি করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে দুজন আমেরিকায়, একজন কানাডায় রয়েছে, দুজন লিবিয়ায় ছিলো পরে পাকিস্তানে গেছে। বাকি দুজন ঠিক কোথায় আছে এখনও তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে তারা পাকিস্তানে আছে। যদিও পাকিস্তান সরকার স্বীকার করে না। এরই মধ্যে চ্যানেল আই কর্নেল রশিদ চৌধুরীর স্বাক্ষাৎকার নিয়ে এসেছে। কাজেই সেখানে যে রশিদ চৌধুরী রয়েছে এটা নিশ্চিত। খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করা, রায় কার্যকর করা এটা আমাদের কর্তব্য, আমরা তা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি জারি করে হত্যার বিচার বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে সেই ইনডেমনিটি বাতিল করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছি। কয়েকজনের ফাঁসি হয়েছে। একজনকে ব্যাংকক থেকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ির সেই মূল সিঁড়িই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে সব ব্যথা-বেদনা সহ্য করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে প্রেরণা যোগায় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।