মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ হযরত আলী লিটনের বিরুদ্ধে লিফলেট লাগিয়ে ধর্ষনের অভিযোগ তুলেছে তারই এলাকার জনগণ।
তারা অভিযুক্ত লিটন মেম্বারের অপসারণেরও দাবি তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে এখন এলাকায় সর্বত্র আলোচনা চলছে।
ধর্ষনের স্বীকার নারী নাম-ঠিকানা প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদকের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমি গত শুক্রবার (১১ জানুয়ারি ২০১৯ইং) রামপালের পানাম মসজিদের সামনে জুমা’র নামায শেষে অর্থ সহায়তার আশায় মুসুল্লীদের কাছে গিয়েছিলাম। তখন লিটন মেম্বার ওখানেই উপস্থিত ছিলো। তখন সবার সামনেই লিটন মেম্বার আমাকে বললো আমার সাথে আসো- আমাদের বাসার একজনের কাছ থেকে ২-৩ হাজার টাকা নিয়ে দিবো। এরপরে উনি আমাকে নিয়ে উনার বাসায় উনার রুমে আটকে অনেকভাবে জোর করে……………….’
ধর্ষণের শিকার নারীকে বার বার ঘটনার বিবরণ দেয়া এবং নানান প্রশ্নের মুখে বিব্রত হতে হয়। এ ভিকটিম বলছিলেন, “আমার কাছ থেকে তারা একবার সাদা কাগজে এবং আরেকবার সাদা দলিলে স্বাক্ষর রেখে দেয়। এখন আমি মিথ্যা বলতেছি এমন প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। একটা সত্য ঘটনা মিথ্যা বলে প্রমাণের চেষ্টা করলে খারাপ লাগবেই। মানুষজনের সামনে কথা বলতে আমার খুউব লজ্জা লাগছে। এতগুলা মানুষের সামনে এত পারসোনাল বিষয়ে এতকথা বলা! তারপর এক একজন এক এক কথা বলে একেকটা মন্তব্য করে। যেমন এটা মিথ্যা হইতে পারে বা আমি খারাপ।”
এই ধরনের ঘটনায় দোষী প্রমানিত হলে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও অর্থ দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে বাংলাদেশের আইনে।
অধিকাংশ বিচারব্যবস্থায় ধর্ষণ বলতে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়া কিংবা অন্য কোনোভাবে তার দেহে যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে বুঝায়।
তবে সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আইনবিদদের মধ্যে ধর্ষণের সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থায় ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করে ‘যৌন আক্রমণ’ কিংবা ‘অপরাধমূলক যৌন আচরণ’ শব্দগুচ্ছকে ব্যবহার করা হয়।
ধর্ষণের শিকার নারীদের সারাদেশে ৮টি ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের মাধ্যমে কাউন্সেলিং, পুলিশি ও আইনি সহায়তা দেয়া হয়। ২০০১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠিত এসব কেন্দ্র থেকে ৪ হাজার ৩শ ৪১টি যৌন নির্যাতনের মামলা হয়েছে যার মধ্যে ৫শ ৭৮টি বিচার হয়েছে এবং সাজা হয়েছে মাত্র ৬৪টি ঘটনার।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ বলছেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত, সত্যতা পাওয়া গেলে মেম্বারকে সাসপেন্ড করা হবে।’
রামপাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলছেন, ‘এমন কোন অভিযোগ পাইনি। মহিলা চাইলে এখনো অভিযোগ করতে পারবেন। সুযোগ শেষ হয় নি। প্রশাসন পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’
অভিযুক্ত লিটন মেম্বার বলছেন তিনি মহিলাকে চিনেন না। তাকে ফাসাতে এটা তার প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র।