শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যার আসামির পালাতে সহায়তার অভিযোগ ওঠার পর সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন সিলেটের জালালাবাদ থানার দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা।
তদন্তে দায়িত্বে গাফিলতির প্রমাণ মেলায় পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ নিশ্চিত করেন।
১৩ বছরের রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর আসামিদের পালাতে সহায়তার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। আসামিদের একজন পালিয়ে সৌদি আরবেও চলে যান।
ফেইসবুকে নির্যাতনের ভিডিও তোলার পর তা নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে নিজেদের সদস্যদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করে পুলিশ।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত শুক্রবার আলমগীরকে জালালাবাদ থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
পরে তাকে সাময়িক বরখাস্তের অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে চিঠি দেওয়া হলে সোমবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে আলমগীরকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ সিলেটে আসে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার আলমগীরকে সামিয়ক বরখাস্তের পাশাপাশি রংপুর রেঞ্জে বদলিরও আদেশ দিয়েছে বলে উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ জানান।
গত শুক্রবার আলমগীরকে সরানোর পাশাপাশি জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলামকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন। ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তারা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর আসামি মুহিত আলমকে বাঁচাতে এবং তার সৌদিপ্রবাসী ভাই কামরুল ইসলামকে পালিয়ে যেতে এই তিন পুলিশ কর্মকর্তা সহায়তা করেন বলে অভিযোগ রাজনের বাবার।
ঘটনার দিন দায়িত্বে অবহেলা এবং থানায় মামলা করতে গেলে রাজনের বাবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহারেরও অভিযোগ ওঠে এই পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
রাজন খুনের মামলার চার আসামির মধ্যে মুহিতসহ অন্যদের জনতাই ধরে পুলিশে দেয়। সৌদি আরবে পালিয়ে যাওয়া কামরুলকেও প্রবাসীদের সক্রিয়তায় দূতাবাস কর্মকর্তারা আটক করে।
এই মামলায় এই পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে সাতজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।