মুন্সিগঞ্জ, ২ মে, ২০২০, তানজিল হাসান (আমার বিক্রমপুর)
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন মুন্সিগঞ্জের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
বিশেষ করে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা বেশি সমস্যায় আছেন। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। খেয়ে-না খেয়ে কোনোমতে দিন পার করছেন তারা।
জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জের পাঁচ শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। শিক্ষক ও স্টাফ মিলিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের বেতন হয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টিউশন ফি থেকে। গত মার্চে করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে করে কোনও কিন্ডারগার্টেন কর্তৃপক্ষই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি তুলতে পারেনি। কাজেই গত মাসের বেতন পাননি বেশিরভাগ শিক্ষক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা নামমাত্র বেতনে চাকরি করেন। বেতনের পাশাপাশি টিউশন করিয়ে কোনোমতে তাদের সংসার চালাতে হয়। করোনার মধ্যে টিউশনিও বন্ধ আছে। তারা পড়েছেন মহাসমস্যায়। শিক্ষকরা সম্মানের ভয়ে কোথা থেকে ত্রাণ নিতেও পারেন না।
মুন্সিগঞ্জ শহরের মাঠপাড়ায় অবস্থিত লিটল হোমস কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘এই অবস্থাটা আমাদের জন্য দুর্বিসহ। আমরা কিন্ডারগার্টেনের আয়ের ওপর চলতাম। স্কুল বন্ধ থাকায় বিপদে পড়েছি। ২৪০ জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য ২৭ জন শিক্ষক ও তিন জন আয়া আছেন। তাদের কারও মার্চ মাসের বেতন হয়নি। এপ্রিল মাসও শেষ হয়ে গেলো।’
মুন্সিগঞ্জে কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জের পাঁচ শতাধিক কিন্ডারগার্টেনের পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষক ও স্টাফ বেতন পাননি। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কোনও প্রণোদনার ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হতো।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘বেতন না পাওয়ার বিষয়টি আমাদের কেউ অবগত করেননি। কিন্ডারগার্টেনগুলো বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়। যারা বেতন পাননি তারা যদি আমাদের কাছে আসেন আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো। স্কুল বন্ধ হলে যে বেতন পাবেন না, তেমন হওয়া ঠিক না। বিষয়টি আমরা দেখবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের জন্য সরকারিভাবে কোনও প্রণোদনা দিলে তারা সেটা পাবেন। তবে, স্থানীয়ভাবে কোনও প্রণোদনার ব্যবস্থা আমরা করতে পারবো না। কোনও শিক্ষকের ঘরে যদি খাবার না থাকে, তাহলে আমরা নিশ্চয় সেটা বিবেচনা করবো।’