মুন্সিগঞ্জ, ১০ জুন ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ীতে প্রবাসীর বাড়িতে অবস্থান নিয়ে বিয়ের দাবিতে রীতিমত এলাকাবাসীকে এক করে ফেলেছেন এক নারী।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের মুলচর গ্রামের আহসান আল্লাহ্ মালের বাড়িতে। অনশন নেওয়া নারী একই উপজেলার কামারখাড়া ইউনিয়নের বেশনাল গ্রামের মৃত শুক্কুর আলী মালতের মেয়ে।
এর আগে অনশন নেয়া নারী ফিরুজা টংগিবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) মুলচর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রবাসীর বাড়ির সামনে ওই নারী রাস্তায় অবস্থান করছেন। ভেতর থেকে গেট আটকিয়ে পরিবারের সবাই সটকে পড়েছেন। সাংবাদিকদের খবর পেয়ে পরে বাড়িতে চলে আসেন ছেলের ভাই, মা, বোন ও স্থানীয়রা। এসময় নারীর উপরে মারমুখী অবস্থান নেয় পরিবার ও স্থানীয়রা।
ওই নারী অভিযোগ করে জানান, প্রবাসী কিরণ আমার পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা ও নানী বাড়ির দিক থেকে আত্মীয় হওয়ার সুবাদে তার সাথে আমার পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিগত ৮ বছর আগে বিদেশ থেকে এসে বিয়ে করবে বলে সৌদি আরব চলে যায় সে। সৌদি যাওয়ার পর নিয়মিত আমাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিলো। বিগত ৪বছর আগে সে আমাকে বলে আমার কাছে ভিসা আছে তুমি সৌদি চলে আসো এখানে তোমাকে বিয়ে করবো। পরে কবির নামের এক লোকের মাধ্যমে আমার পাসপোর্ট নেয় এবং আমাকে সৌদি আরবে তার কাছে নিয়ে যায়।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, সৌদি নিয়ে আমাকে এক বাড়িতে কাজে লাগিয়ে দেয় কিরণ। দুই বছর আগে আমাকে দাম্মামে তার বাসায় নিয়ে যায় এবং সেখানে আমরা স্বামী-স্ত্রীর মতই একসাথে থাকি। কিন্তু আমি বিয়ে করতে বললে আমাকে বলে কিছুদিনের মধ্যে আমরা দেশে গিয়ে বিয়ে করবো। পরে আমাকে দেশে আসার ব্যবস্থা করে দিয়ে সে গত ১৬ মে দেশে চলে আসে। এবং তার ব্যবস্থা করে দেওয়া অনুযায়ী আমি ২২ মে দেশে চলে আসি। দেশে আসার পরে সে নিয়মিত আমাদের বাড়িতে এসে আমার সাথে রাত্রিযাপন করতো। পরে ৬ জুন আমাদের বাড়িতে বসে ৯জুন আমাদের বিয়ের দিন ধার্য্য করা হয়। কিন্তু গত ৭ জুন ঈদের দিন থেকে সে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাকে মোবাইল ফোনে না পেয়ে গতকাল ৯ জুন আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করলে কিরণকে লুকিয়ে রেখে তার বাড়ির লোকজন আমাকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করে।
স্থানীয়রা জানান, তার কাছে যদি বিয়ের ডকুমেন্টস বা কাবিননামা থাকে তাহলে আমরা স্থানীয়রা বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে একটা পর্যায়ে যাবো। এখন প্রেম, ছবি, মেলামেশা আজকাল হয়ে থাকে। ছবি দেখে তাকে বিয়ে করেছে এটা কীভাবে বুঝবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্রবাসী কিরণের আত্মীয় জজ মিয়া খোকন বেপারী বলেন, আমরা কিরণের বাবার সাথে কথা বলে এ বিষয়টি সমাধান করে দিবো।
দিঘিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক নূরে আলম বলেন, এমন একটি খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম কিন্তু সেখানে মেয়ে এবং ওই বাড়ির কাউকে পাইনি।
টংগিবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, সৌদি আরব এমন একটি ঘটনা হয়েছে মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। ছেলের এলাকায় কিছু হয়েছে কিনা সেটা আমি জানিনা।