মুন্সিগঞ্জ, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ীতে শিক্ষকের কাছে অভিনব প্রতারণার শিকার হয়ে স্বামীর মর্যাদা পেতে আকুতি জানিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। এ নিয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। কথা বলেছেন ক্যামেরার সামনেও। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে যাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত শিক্ষক মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ সরকার (৪৩) টংগিবাড়ীর ধীপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ব্রাহ্মণভিটা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক ও মুন্সিগঞ্জ শহরের দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার মুহাম্মদ শামসুদ্দিন আহমেদের পুত্র। তিনি বিবাহিত ও এক মেয়ে সন্তানের জনক। ভুক্তভোগী ওই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী (১৯)।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ‘২০২২ সালে আমি যখন দশম শ্রেণীতে পড়ি তখনকার ঘটনা৷ আমি ওই শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। তখনই তিনি ফুসলাতেন। তিনি নাকি আমাকে দেখে স্পেশাল ফিল করেন, ভালোবাসেন। একপর্যায়ে আমিও আবেগে পড়ে যাই। প্রেমে পড়ে যাই। আমাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্পর্কের ৬ মাস পর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তিনি যেখানে প্রাইভেট পড়াতেন সেখানেই আমাদের তথাকথিত বিয়ের নাটক সাজানো হয়। কোনরকম স্বাক্ষী ছাড়াই। কাজী যেভাবে বিয়ে পড়ায় উনি নিজেই কাজী সেজে বাবা-মার নাম বলে আমাকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তার সাথে একাধিকবার শারিরীক সম্পর্ক হয়। আমি একপর্যায়ে তাকে বলি যে আমাদের যেহেতু রেজিষ্ট্রি করে বিয়ে হয়নি তাহলে এভাবে মেলামেশা ঠিক হচ্ছে না। আমরা রেজিষ্ট্রি করে বিয়ে করে নেই। তিনি সবসময়ই উত্তর দেন, এখন একটু ঝামেলায় আছি। এভাবে ১৭-১৮ মাস চলে যায়। এরপর ধীরে ধীরে আমি তার সাথে দেখা করা বন্ধ করে দেই। গতমাসেও আমি বিয়ে করার জন্য তাকে চাপ দেই। কিন্তু তিনি আমার সাথে আর যোগাযোগই রাখতে চাচ্ছেন না, আমার সাথে প্রতারণা করেছেন। আমি চাই তিনি আমাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিক।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিষয়টি আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছিলাম। তিনি বারবার আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। আমি ন্যায় বিচার চাই।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শাহনেওয়াজের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে বসতঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণভিটা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমন মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ বলেন, ‘১৫ দিন আগে ভুক্তভোগী ও তার মা বিদ্যালয়ে এসে ঘটনার বিস্তারিত জানান। তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহনেওয়াজ সরকার ঘটনাটি মিথ্যা বলে আমার কাছে দাবি করেন।’
টংগীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’