২২শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | বিকাল ৫:৪৫
মুন্সিগঞ্জে বয়োজৈষ্ঠ আইনজীবির মৃত্যুতে স্বরণ সভা, শ্রদ্ধা জানিয়ে বিচারকার্য মুলতবি
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, শ্রীকান্ত দাস (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এ.এইচ.এম শামছুজ্জামান মানিকের (৭৬) মৃত্যুতে স্বরণ সভা হয়েছে। পরে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আদালতের বিচারকার্য মুলতবি ঘোষণা করা হয়।

আজ বুধবার বেলা ১১ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাস কক্ষে এ স্বরণ সভা হয়। পরে ওই আইনজীবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আদালতের বিচারকার্য মুলতবি ঘোষণা করেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আবদুল হান্নান।

মৃত এ.এইচ.এম শামছুজ্জামান মানিক সদর উপজেলার উত্তর ইসলামপুর ও বর্তমানে মানিকপুর এলাকার মরহুম এ.কে.এম নুরুল ইসলামের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় মানিকপুর এলাকার নিজ বসতঘরে বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ কাজী আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল হাসান মৃধার সার্বিক তত্বাবধানে স্বরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন, মুন্সিগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন উর্মি, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক ড. মো. আলমগীর, যুগ্ন জেলা জজ ১ম আদালতের বিচারক ফাহমিদা খাতুন, যুগ্ন জেলা জজ ২য় আদালতের বিচারক ফেরদৌসী বেগম, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী কামরুল ইসলাম, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম, ইফতি হাসান ইমরান, শহিদুল ইসলাম।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আর্শেদ উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মো. জাকারিয়া মোল্লা, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট নাছিরুজ্জামান খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন খান স্বপন, অ্যাডভোকেট তোতা মিয়া, অ্যাডভোকেট নাছিমা আক্তার, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আমান উল্লাহ প্রধান শাহীনসহ আদালতের অন্যান্য বিচারক ও আইনজীবীরা।

এ এইচ এম শামছুজ্জামান মানিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার উত্তর ইসলামপুর গ্রামে সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে মুন্সিগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস এস সি, ১৯৬৭ সালে সরকারি হরগঙ্গা মহাবিদ্যালয় হতে এইচ এস সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৯ সালে কায়েদে আজম ডিগ্রি কলেজ, ঢাকা থেকে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৯৮৩ সালে নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজ থেকে এলএলবি ও ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৯৯১ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দেওয়ানী আদালতে আইন পেশায় তার কর্মময় জীবন শুরু হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ পেশায়ই নিয়োজিত ছিলেন। তার পিতা মরহুম এ.কে.এম নুরুল ইসলাম মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকা জজ কোর্টে সেরেস্তাদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

শামছুজ্জামান মানিক ৭০ দশকে বাম রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, এছাড়া নাট্যাঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ভারতের আগরতলা থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। খেলাধূলা ও আইন পেশায় আসার পূর্বে জার্মান ভিত্তিক এনজিও মাদার্স ক্লাবের সমন্বয়কারী হিসাবেও কাজ করেছেন।

তার বড় মেয়ে নাসরিন তামান্না, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট মেয়ে শারমিন তামান্না ২৬ তম বিসিএস (শিক্ষা) ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমীতে কর্মরত আছেন। তার একমাত্র ছেলে তৌহিদুজ্জামান পাভেল ২৮তম বিসিএস (প্রশাসন), উপ-সচিব, বর্তমানে উপ-পরিচালক হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনে কর্মরত আছেন। তার স্ত্রী মরহুমা মাজেদা বেগম, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ছিলেন।

তার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যসহ আইনজীবী সমিতির সকলে শোক প্রকাশের পাশাপাশি আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন।