মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসিফ হাসান হাওলাদারের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান হাওলাদার।
তিনি বলেন, গত ১৭ এপ্রিল মিথ্যা মামলায় পুলিশ হেফাজতে আটকে রেখে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। এর এক মাস অতিবাহিত হতে চললেও, কাউকে গ্রেফতার করা হয় নি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সিরাজদিখান থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসানের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় নি। সে সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রভাবশালীরা হুমকি দিচ্ছে। ফলে তারা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ অবস্থায় তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আসিফের পরিবারের পক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার বোন নুসরাত জাহান তনিমা।
লিখিত বক্তব্যে তনিমা বলেন, গত ১২ এপ্রিল আসিফকে বেধড়ক পিটিয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তার চিকিৎসা না করিয়ে সিরাজদিখান থানার ওসি পরদিন মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও সিরাজদিখান থানা পুলিশ গুরুতর অসুস্থ আসিফের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা না নিয়েই কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। তাদের অবহেলা ও রহস্যজনক আচরণের কারণেই শেষ পর্যন্ত করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়েছে আসিফকে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তার বাবাকে বাদী করে মামলা গ্রহণ করলেও, সে মামলায় পুলিশকে আসামি করা হয় নি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনা এবং আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ দেওয়ান বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী আসিফের হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং নিহতের পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আসিফ হত্যার বিচার দাবি করে আরও বক্তব্য দেন কোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুদ রানা, সিরাজদিখান উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি সৈকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. আইয়ুব শেখ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমরান হোসেন তপু।
ছাত্রলীগের নেতা আসিফ হাসানের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১২ এপ্রিল, ২০১৬ রাত সাড়ে আটটায় কোলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসিফ হাসান হাওলাদার ও তার সহকর্মী বিদ্যুৎ মোল্লা মোটর বাইক যোগে বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে কোলা মিরপুরী দায়রা শরীফ প্রাঙ্গনে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় আসিফকে হামলাকারীরা অপহরণ করে পাশ্ববর্তী এলাকার শ্রীনগরে সিং পাড়ার একটি বাড়িতে আটকে রাখে। কিছুক্ষণ পর সিরাজদীখান থানার পুলিশ এসে আসিফকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায় এবং দুই দিন পর বিনা চিকিৎসায় আসিফের মুত্যু হয়।
এরপর থেকে আসিফের পরিবার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে আসছে, পরিকল্পিতভাবে সিরাজদিখান থানার ওসির নেতৃত্বে আসিফকে হত্যা করা হয়েছে।