১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | রাত ১০:১৭
‘মুন্সিগঞ্জে নদীভাঙন হচ্ছে, চাঁদাবাজি হচ্ছে’- নাহিদ ইসলাম
খবরটি শেয়ার করুন:
22

মুন্সিগঞ্জ, ১৮ জুলাই ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

‘এই মুন্সিগঞ্জে নদীভাঙন হচ্ছে, চাঁদাবাজি হচ্ছে। প্রতি মাসে নদীভাঙনে নতুন নতুন জলবায়ু উদ্বাস্তু হচ্ছে। নদীভাঙন থেকে রক্ষা করব আমরা। নদী দুর্যোগ থেকে রক্ষা করব আমরা। অবৈধ বালু উত্তোলন, চিকিৎসাসেবায় আমূল পরিবর্তন আনব আমরা। এ জেলায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের দুর্গতি রয়েছে। এ জন্য মুন্সিগঞ্জের মানুষ গণ-অভ্যুত্থানে যেভাবে প্রতিবাদ করেছিল, সেভাবে জেগে উঠতে হবে। এলাকায় এলাকায় প্রতিবাদের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।’- এসব কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে মুন্সিগঞ্জ শহরে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আয়োজিত পথসভায় এ কথা বলেন তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আরও ১০টি জেলায় হামলা হবে। তারপরও আমাদের দমন করে রাখা যাবে না। মুজিববাদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ, যে লড়াই আমরা গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ঘোষণা করেছি, ফ্যাসিবাদবিরোধী যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, তা সমাপ্ত না করা পর্যন্ত আমরা থামব না।

‘আমরা যে লড়াই শুরু করেছি, তা চালিয়ে যাব। আমাদের সঙ্গে ওপরওয়ালা আছেন, দেশের জনগণ আছেন। ভয়ের কোনো কারণ নেই। সামনে আরও একটি লড়াই আসছে। সে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই মুন্সিগঞ্জে হাজার মানুষ প্রবাসে থাকেন। আমরা সেই প্রবাসীদের ভোটাধিকারের পক্ষে কথা বলেছি। অনেকেই বলছেন, প্রবাসীদের ভোটের অধিকার নেই। তাঁরা কেন ভোট দেবেন। আমরা বলতে চাই, প্রবাসীরা দেশের অংশ, আমরা তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করব।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রমুখ।

পথসভায় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা যে সংস্কার চাচ্ছি, এই সংস্কার নির্দিষ্ট কোনো দলের নয়। সংস্কার বাংলাদেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে। আমরা দেখেছি অতীতে নেতাকে পূজা করা হয়েছিল। আমরা চাই পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম যেন আর না হয়। এ দেশ আর নেতানির্ভর হবে না। নেতা ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী মত ও সব রাজনৈতিক দলগুলোর সবাই পরবর্তী বাংলাদেশ নির্মাণে ঐক্যভাবে কাজ করতে হবে।’

গোপালগঞ্জে হামলার প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্ত হয়নি। ফ্যাসিস্টমুক্ত হতে বাংলাদেশের আরও অনেক পথ বাকি। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সেই পথ পাড়ি দিতে হবে। আমরা কিছুদিন আগে গোপালগঞ্জে যাই, আমরা ভেবেছিলাম একটি স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ সেই গোপালগঞ্জ। কিন্তু আমরা দেখেছি, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা হয়ে উঠেছে গোপালগঞ্জ। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, পুরো বাংলাদেশের যেখানে সশস্ত্র ফ্যাসিবাদের সন্ত্রাসীরা থাকবে, সেখানে আমাদের দলমত–নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে।’

পদযাত্রা ও পথসভাকে কেন্দ্র করে আজ ভোর থেকেই দলটির মুন্সিগঞ্জ শহরের নেতা-কর্মীরা সুপার মার্কেট এলাকায় সমবেত হতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মীদের জটলা বাড়তে থাকে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সুপার মার্কেট এলাকায় সভা শুরু হয়, যা চলে বেলা সোয়া একটা পর্যন্ত।