৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ৯:৩২
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে জাল ফ্যাক্টরিতে শিশুর মৃত্যু, লাশ নিয়ে নাটক
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৮ জুন, ২০২০, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার জাল তৈরির ফ্যাক্টরিতে লিফটে চাপা পড়ে ৩ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (৮ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের ডিঙ্গাভাঙা এলাকার ঈগল ফাইবার ফ্যাক্টরিতে এ দূর্ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ উঠেছে, ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আক্তার হোসেন পুলিশকে না জানিয়ে লাশ পটুয়াখালী পাঠিয়ে দিয়েছে। নিহত শিশুটির নাম মো. মূসা (৩)। সে পটুয়াখালীর ধলেশ্বর এলাকার মো. সাজুর ছেলে। মূসা তাঁর মা-বাবার সাথে মুন্সিগঞ্জ সদরের ডিঙ্গাভাঙা এলাকায় থাকত। তার মা- বাবা ঈগল ফাইবার ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে নিহতের বাবা সাজু ও তার মা ফ্যাক্টরিতে কাজ করছিলেন। এ সময় তাদের তিন বছর বয়সী বাচ্চাটাও তাদের সাথে ছিল। ফ্যাক্টরির ভিতর মালামাল উঠা নামা করার জন্য একটি লিফটের ব্যবস্থা ছিল। সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বাচ্চাটি ওই লিফটের নিচে যায়। এসময় উপর থেকে নামতে থাকা লিফটের নিচে চাপা পড়ে গুরুত্বর আহত হয় শিশু মূসা। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফ্যাক্টরিতেই চিকিৎসার চেষ্টা করা হয়।

অবস্থা খারাপ হলে কিছুক্ষণ পরেই শিশুটিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মূসাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এদিকে বাচ্চাটি মারা যাওয়ার পরপরই তড়িঘড়ি করে সাজু ও তার স্ত্রীকে দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় প্রতিষ্ঠানটির মালিক আক্তার হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, গত ৬ মাস আগেও এ প্রতিষ্ঠানে মেশিন চাপায় এক তরুণ মারা যায়। সেদিন মালিক পক্ষ সামান্য কিছু ক্ষতিপূরণ দিয়ে ব্যাপারটা মিমাংশা করেন। আজকে এতো বড় একটা ঘটনা ঘটল। সেটা ধামাচাপা দিতে মালিক আক্তার হোসেনরা বাচ্চার মা-বাবাকে হাসপাতাল থেকেই পটুয়াখালী পাঠিয়ে দেয়। সব ঝামেলা শেষ হওয়ার পর দুপুরে পুলিশ আসে।

প্রতিষ্ঠানটির মালিক আক্তার হোসেন বলেন, বাচ্চাটির ধাফন-কাফন করতে হবে তাই দেশে পাঠিয়ে দিয়েছি।

একটি মৃত্যুর ঘটনা পুলিশকে না জানিয়ে কিভাবে দেশে পাঠালেন , জিঙ্গেস করতেই তিনি বলেন, দেশে কত মানুষ রাস্তা-ঘাটে মারা যায়, এখানেও মারা গেছে। এদের দায়ভার কি আমার নাকি? আমি কি বাচ্চা মরে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিব নাকি।

ঘটনার ধামাচাপা দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অভিযোগের বিষটি জানতে চাইলে, আক্তার কোন কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিচুর রহমান, সকাল সাড়ে ৮ টার ঘটনা। আমরা জেনেছি সাড়ে ১২ টা-একটার দিকে। বাচ্চার মা-বাবা কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের ফোন নম্বরও বন্ধ।

এক্ষেত্রে পুলিশি কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাবে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নিতে হলে লাশের দরকার, সেটিও নেই। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

error: দুঃখিত!