মুন্সিগঞ্জ, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ সদরের পঞ্চসারে দুই বছর আগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে চালককে সোয়েটার দিয়ে বেঁধে পাটের বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যার ঘটনায় ৩ জনের যাবজ্জীবন আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। মামলা থেকে খালাস পান এজাহারভুক্ত অন্য ৩ জন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন উর্মি এ রায় দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারি শামীম আল মামুন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার ভিটি হোগলা গ্রামের ইনু সরকারের ছেলে মুছা সরকার (৪৫), পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার দক্ষিণ বলইবুনিয়া গ্রামের মৃত মৌজআলী চৌকিদারের ছেলে সবুজ চৌকিদার (২৮) ও একই জেলার কলাপাড়া উপজেলার নাসনা পাড়া গ্রামের আবুল ফরাজীর ছেলে নজরুল ফরাজী (৩০)। তারা সবাই সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নের মুক্তারপুর এলাকায় ভাড়া থাকেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- লৌহজং উপজেলার বংখিরা গ্রামের আশরাফ শেখের ছেলে আবুল হোসেন (৪০), একই উপজেলার পালগাঁও গ্রামের হাজী আলাউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মোশারফ হোসেন (৩৮) ও খোরশেদ।
রায়ের সময় আসামি মুছা সরকার, নজরুল ফরাজী ও সবুজ চৌকিদারকে পুলিশ হেফাজতে আদালতে আনা হয়। এছাড়া মোশারফ হোসেন জামিনে মুক্ত অবস্থায় আদালতে হাজির ছিলেন। তবে অন্য অভিযুক্তরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি সদর উপজেলার মুক্তারপুর রিভারভিউ কোল্ড স্টোরেজ সংলগ্ন মল্লিক রায়ের সরকারি দিঘিতে পানিতে ভাসমান অবস্থায় এক ব্যক্তির মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। পরে খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহটি সোয়েটার দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাটের বস্তায় আটকানো ছিল। পরে সেটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পরের দিন মুন্সিগঞ্জ সদর থানার কর্তব্যরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খসরু আহম্মেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।
পরে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট, আলামত ও আশেপাশের স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদে মরদেহের পরিচয় পাওয়া যায়। হিমেল মীর নামের ওই ব্যক্তি পঞ্চসারের গোসাইরবাগ এলাকার সাইজদ্দিন মীরের ছেলে বলে সনাক্ত হন। তিনি অটোরিকশার চালক ছিলেন। মামলার ঘটনা তদন্তে পুলিশ উপরিউক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করলে আসামি মুছা সরকার, নজরুল ফরাজী, সবুজ চৌকিদার আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবন্দির ভিত্তিতে আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন।