মুন্সিগঞ্জ, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য ও কুমারভোগ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাউসার তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ফেরিঘাট, মাছঘাট ও ট্রলার ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদা তোলার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুই নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট বিএনপি নেতা কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেনকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ ও এর জবাব দিতে বলা হয়। পরদিন তারা জবাব দেন। কিন্তু ওই নোটিশের জবাব পর্যালোচনা করে সন্তুষ্ট ও আশ্বস্ত হতে না পারায় জেলা বিএনপি ওই দুই ব্যক্তিকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও কেন্দ্রীয় বিএনপিকে অনুরোধ করা হয়।
এর আগে শিমুলিয়া ঘাট থেকে বিএনপি নেতা–কর্মীদের চাঁদা তোলার বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলোর শেষ পাতায় ‘মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট, চাঁদা তুলছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপা হয়। যেটি প্রকাশিত হয় আমার বিক্রমপুরেও।
ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থী এখানে বেড়াতে আসেন। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কাছ থেকে লৌহজং উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মোল্লা প্রায় ১ কোটি ৪২ লাখ টাকায় ঘাটের ইজারা নেন। এ ছাড়া তিনি ৮ লাখ টাকায় দুটি ট্রলার ঘাট ও ১০ লাখ টাকায় মাছঘাটেরও ইজারা নেন।
ইজারাদার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা কাউসার তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি দল ঘাটের সব ব্যবসা দখলে নেয়। নেতা-কর্মীরা ১৬ আগস্ট ঘাটের পার্কিং, ট্রলার ঘাট, দোকান, রেস্তোরাঁ থেকে টাকা তুলতে শুরু করেন। পরদিন ঘাটের দায়িত্বে থাকা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শেখ মেহেদি হাসানকে মারধর করে ঘাট থেকে বের করে দেয়া হয়। পরে কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেনদের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে বাধ্য হন ইজারাদার। গত ২০ আগস্ট থেকে কাউসার তালুকদার ও আনোয়ার হোসেন ঘাট থেকে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা তুলে নিজেদের কাছে রাখছেন।