মুন্সিগঞ্জ, ২৯ জুলাই ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে পৃথক পৃথক মৌজায় একটি আবাসন কোম্পানীর পক্ষ নিয়ে কৌশলে কৃষকের জমি দখলের চেষ্টা ও বালু ভরাটের অভিযোগ উঠেছে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
উপজেলার ষোলঘর এলাকায় বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে বালু ভরাটের লক্ষ্যে টানা হচ্ছে ড্রেজারের পাইপ লাইন। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনিক ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার ষোলঘর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের (ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে) পাশেই বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে বালু ভরাটের বন্দোবন্ত করা হচ্ছে। উপজেলার ষোলঘর, পূর্ব দেউলভোগ, পাটাভোগ ও কল্লিগাঁও মৌজায় কৃষকের জমি ভরাটের লক্ষ্যে ড্রেজারের পাইপ লাইন টানছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। এ নেতা উপজেলার পাকিরা পাড়া মোড় থেকে সমষাবাদ খাল হয়ে ড্রেজারের পাইপ বসাচ্ছেন।
এদিকে, সম্প্রতি পাটাভোগ এলাকায় ড্রেজারের মাধ্যমে কৃষকের জমিতে বালু ভরাট নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪ জনকে কুপিয়ে আহত করে ফয়সাল বাহিনী। এ ফয়সাল বাহিনী ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার লোকজন। এরপর থেকেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতান লোকজন আরও বেপারোয়া হয়ে উঠেছে। ষোলঘরসহ আরও কয়েকটি গ্রামে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদিন কয়েকটি গ্রামে ৩০ থেকে ৪০টি মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিচ্ছে তারা।
ষোলঘর এলাকার কৃষক ওমর আলী অভিযোগ করে বলেন, তার ৪২ শতাংশ জমি রয়েছে। তার পার্শ্ববর্তী জমি দখলের উদ্দেশ্যে বালু ভরাট করার পায়তারা করা হচ্ছে। ওমর আলীর মতোই পূর্ব দেউলভোগের কৃষক মোশারফ হোসেন, শেখ জামাল ও মজিদ বেপারী এবং খৈয়াগাঁও এলাকার জমির বেপারী ও কৃষক ফারুক হোসেন তাদের জমি দখল হওয়ার আশংকায় রয়েছেন।
কৃষকরা জানিয়েছেন, হাউজিং কোম্পানীর হয়ে তাদের জমিতে বালু ভরাটের দায়িত্বে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অনিক ইসলাম। সম্প্রতি ডেজ্রারের পাইপ বসাতে ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার লোকজনকে বাঁধা প্রদান করে ষোলঘর এলাকার কৃষকসহ স্থানীয়রা। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার লোকজন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অনিক ইসলাম বলেন, বালু ভরাটের সাথে কোন ভাবেই আমি জড়িত না। আমি স্বপ্নধারা হাউজিং কোম্পানীতে চাকুরী করি। মাসে আমাকে কিছু সম্মানী দেয়। আমি শুধু দেখভাল করি। চাকুরীর পাশাপাশি আমি রাজনীতি করি। আর রাজনীতি করার ফলে আমার চারিদিকে শত্রু আছে তারাই আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটায়। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইন বলেন, ‘কৃষি জমি ভরাটের খবর পেয়ে ওই এলাকায় ইতিমধ্যে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। যারা কৃষিজমিতে বালু ভরাট করছিলো তাদের নিষেধ করে এসেছি। নতুন করে কারও জমি ভরাটের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’