মুন্সিগঞ্জ, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সফরে এসে আন্দোলনে মুন্সিগঞ্জের নিহত ও আহতদের পরিবারের সাথে মতবিনিময় করেছেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম। বিকাল ৩ টায় সরকারি হরগঙ্গা কলেজ মাঠে উন্মুক্ত মতবিনিময় সভায় ছাত্র-জনতার সাথে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে তার।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের খালইস্ট এলাকায় আফতাবউদ্দিন কমপ্লেক্সের ৩য় তলার একটি রেষ্টুরেন্টে ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জে নিহত জেলার বাসিন্দা এরকম ৭টি পরিবার সারজিস আলমের কাছে তাদের বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী তাদের সাথে কথা বলেন সারজিস।
সেখানে উপস্থিত আমার বিক্রমপুরের প্রতিবেদক নাজমুল হাসান শাওন এসব তথ্য পাঠিয়েছেন।
পরিবারগুলো সারজিস আলমকে জানিয়েছেন, আন্দোলনের দিন অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলাকারী অনেক ব্যক্তি এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মামলা থেকে যোগসাজশে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। আসামিদের ব্যাপারে প্রশাসনও শক্ত অবস্থান নিচ্ছে না। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অনেকে ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেটে আন্দোলনের বিভিন্ন ভিডিও-ছবি সারজিস কে দেখান। সারজিস আলম সকলের কথা শুনে নোট নেন এবং আহতদের চিকিৎসা ব্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ হতে বহন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
জানা গেছে, সকাল ৯ টার দিকে মুন্সিগঞ্জে পৌছান সারজিস আলম। পরে তিনি ওই রেষ্টুরেন্টে আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতার সাথে প্রাথমিক আলোচনা শেষে সরকারি হরগঙ্গা কলেজের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন সারজিস আলম। এরপর আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবার আসে সারজিস আলমের সাথে সাক্ষাৎ করতে। তাদের সাথে মতবিনিময় করেন সারজিস। এরপর তিনি বিভিন্ন দলের নেতৃৃবৃন্দের সাথে কথা বলবেন এবং সবশেষে দুপুর ৩ টায় জেলা শহরে অবস্থিত সরকারি হরগঙ্গা কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভা’য় কথা বলবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তত ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৩ জন নিহত হন গেল ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেট এলাকায়। বাকি ৬ জন ঢাকায়।
ঢাকায় নিহতরা হলেন- মিরকাদিম পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব, রামগোপালপুর এলাকার আনিছুর রহমান চৌধুরীর পুত্র শিক্ষার্থী শারিক চৌধুরী মানিক (২৯), সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের সুখবাসপুর এলাকার সুলতান শেখের পুত্র ব্যবসায়ী ফরিদ শেখ (২৯), সিরাজদিখান উপজেলার মধ্যপাড়া এলাকার মো. কাজলে পুত্র শিক্ষার্থী মোস্তফা জামান সমুদ্র (১৭), গজারিয়া উপজেলার বড় রায়পাড়া এলাকার মো. সানাউল্লাহর পুত্র শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (২০), শ্রীনগর উপজেলার কাশেমনগর এলাকার আইয়ুব খলিফার পুত্র আল আমিন খলিফা (১৮) ও একই উপজেলার নজরুল ইসলামের পুত্র শিক্ষার্থী মো. শোভন (১৯)।
৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জের সুপারমার্কেটে আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ফরাজী (৩৮), মো. সজল (৩০) ও নুর মোহাম্মদ সরদার ওরফে ডিপজল (১৯)। এর মধ্যে রিয়াজুল মৃত কাজী মতিনের ছেলে, সজল আলী আকবরের ছেলে ও ডিপজল সিরাজ সরদারের ছেলে। এরা সকলেই শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।