মুন্সিগঞ্জ, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া ও বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে উঠানো অনুদানের অর্থ নিয়ে আরেক পক্ষের সমালোচনার জেরে ফেসবুক লাইভে এসে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন আন্দোলনে অংশ নেয়া মুন্সিগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের শিক্ষার্থী তাজমহল (১৯)।
ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার কালিপদ চন্দ্র দাসের পুত্র ও সরকারি হরগঙ্গা কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ২৯ মিনিটের একটি লাইভ করেন তাজমহল। ওই লাভের শেষের দিকে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে সেখানেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাজমহল।
২৯ মিনিটের লাইভের বিভিন্ন অংশে ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ৪ তারিখে (মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেটে) আন্দোলন শেষে বাসায় ফিরে যাই। কিন্তু নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছিলাম। বাসায়ও থাকতে পারিনি। মুন্সিগঞ্জে এক গ্রুপ প্রকৃতপক্ষে যারা আন্দোলনকারী ছিলো, সমন্বয়কারী ছিলো তাদেরকে সরিয়ে তারা আমাদের হরগঙ্গা কলেজ ও বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছে। একদল আমাদের নাম খারাপ করার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জে কিছু লোক যারা বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করতে চাচ্ছে এবং প্রকৃতপক্ষে যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলো তাদের দূরে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। মুন্সিগঞ্জে এখনো কোন সমন্বয়ক নেই, আগেও ছিলো না। মাঠপর্যায়ে আমার কি অবদান ছিলো সবাই জানে। তৃতীয় এক পার্টি সবসময় চেষ্টা করছে আমাদের মত কিছু যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়কারী দূরে ঠেলে দেয়ার জন্য।’
ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, একটি পক্ষ তার আন্দোলনে অংশ নেয়া নিয়ে নানা রকমের সমালোচনা করছেন এবং বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে উঠানো অনুদানের অর্থ আত্মসাৎয়ের মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হচ্ছে তাকে।
লাইভের শেষের দিকে এসে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা এক স্বৈরাচার তাড়িয়েছেন, আরেক স্বৈরাচারের পক্ষে যাবেন না। যাচাই-বাছাই করবেন, প্রকৃতপক্ষে দেখবেন তারা আসলেই কি দেশের জন্য কাজ করতে চায়, তারা কি দেশের জন্য শ্রম দিচ্ছে? জানিনা আমার লাইভের পরে কি হয়- সর্বশেষ একটা কথা বলে দেই আপনারা যেহেতু মেনে নিয়েছেন যে আমি দোষী, আমি এই ব্লেইম নিয়ে বাঁচতে চাই না। আমার বাঁচার কোন ইচ্ছা নাই, আমি বাঁচতেও চাই না। আমাকে ক্ষমা করে দিবেন, ব্লেইম মাথায় নিচে বাঁচতে চাই না। আমার পরিবারকে দেখে রাখবেন। আমার বাঁচার কোন ইচ্ছা নাই, মাফ করে দিবেন, আমি দুঃখিত।’