মুন্সিগঞ্জ, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নিয়মবহির্ভূতভাবে নদীর পাড় ঘেঁষে বালু তোলার সময় বাধা দেওয়ায় এলাকাবাসীকে লক্ষ করে দুই দফায় প্রায় অর্ধশত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নৌকা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আহত হয়েছে একজন। একটি ড্রেজার আটক করেছে এলাকাবাসী।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার ষোলআনী বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন মেঘনা নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহতের নাম পলাশ (৩৫)। সে গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত পলাশ বলেন, ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী গ্রামসংলগ্ন মেঘনা নদীতে একটি বৈধ বালুমহাল থাকলেও সন্ধ্যা হলেই তারা ড্রেজার নিয়ে নদীর তীরে চলে আসে। নিয়মবহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে শতাধিক বিঘা জমি ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কয়েকটি ড্রেজার নিয়ে ষোলআনী বিদ্যুৎকেন্দ্র সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছিলেন তাঁরা। এ সময় একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মান্নান, লালু, সৈকত, বাবু, আমজাদসহ কয়েকজন মহড়া দিচ্ছিলেন। তখন স্থানীয় লোকজন বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা এলাকাবাসীকে লক্ষ্য করে ১৭ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। গুলি থেকে বাঁচতে আমি নৌকা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আহত হই। পরে স্থানীয় লোকজন সন্ত্রাসীদের অবরুদ্ধ করে ফেললে তাদের আরেকটি দল ট্রলার নিয়ে এসে এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে ৩০-৩৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে অবরুদ্ধ সন্ত্রাসীদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’
এ সময় উত্তেজিত জনতা ‘আনাস বিন জুবায়ের ড্রেজিং প্রকল্প’ নামের একটি ড্রেজার আটক করে।
অপর আরেক প্রত্যক্ষদর্শী কাউসার হোসেন বলেন, ‘প্রথম দফা গুলিবর্ষণের পর স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে নদীর পাড়ে জড়ো করা হয়। স্থানীয় লোকজন সন্ত্রাসীদের একটি ড্রেজার অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলেও তাদের সেরকম তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরে ইঞ্জিন চালিত আরেকটি ট্রলারে একদল সন্ত্রাসী এসে ফিল্মি স্টাইলে গুলি করতে করতে অবরুদ্ধ সন্ত্রাসীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।’
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ উথান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নদীর এ এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। আজকে ফিল্মি স্টাইলে এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে প্রায় অর্ধশত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। বেশ কয়েকজন আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। বিষয়টি আমি নৌ পুলিশকে জানিয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’
নৌ পুলিশ নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, আপনারা প্রথম আমাকে জানালেন। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’