মুন্সিগঞ্জ, ৫ অক্টোবর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
সাবেক রাষ্ট্রপতি, উপ-প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব, চিকিৎসক, লেখক, উপস্থাপক মুন্সিগঞ্জের সন্তান আবুল কাসেম মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা চৌধুরী (৯৪) মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মুন্সিগঞ্জ ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বদরুদ্দোজা চৌধুরীর পুত্র মাহি বি চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার দিবাগত রাত (৫ অক্টোবর) ৩টা ১২ মিনিটে নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় আক্রান্ত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৮টায় উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাদ জোহর বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার ৮ নম্বর সড়কে অবস্থিত বায়তুল আতিক জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ ঢাকাতেই রাখা হবে।
আগামীকাল রোববার (৬ অক্টোবর) সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ নিজগ্রাম মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের দয়হাটায় নেয়া হবে। পরে সেখান থেকে সকাল ১০টায় শ্রীনগর স্টেডিয়ামে তৃতীয় জানাজা এবং বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
গত ২ অক্টোবর বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়ার তথ্য জানান ছেলে মাহী বি চৌধুরী।
মৃত্যুকালে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। ড. চৌধুরী ব্যক্তিগত জীবনে হাসিনা ওয়ারদা চৌধুরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক। তার পুত্র মাহি বি চৌধুরী মুন্সিগঞ্জ ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। বড় মেয়ে ব্যারিস্টার মুনা চৌধুরী পেশায় আইনজীবী ও ছোট মেয়ে ডা. শায়লা শারমিন চৌধুরী পেশায় চিকিৎসক।
মুন্সিগঞ্জ-১ আসন থেকে বদরুদ্দোজা চৌধুরী পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুবার জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং একবার বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি খালেদা জিয়ার সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ১৫তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের জুন মাসে তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরে ২০০৪ সালের ৮ মে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর ছেলে মাহী বি চৌধুরী দলের মুখপাত্র ও প্রেসিডিয়াম সদস্য।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাজনীতি ও সমাজ উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৩ সালে দেশের সর্ব-উচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপক হিসেবে তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন পুরস্কারও লাভ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।