মুন্সিগঞ্জ, ২০ আগস্ট ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
প্রাণ নিয়ে বাঁচার লড়াই করছেন মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব ও তার স্ত্রী সঙ্গীতপ্রেমি ফাহরিয়া আফরিন। সর্বশেষ গোয়েন্দা খবর বলছে, এই দুইজন দেশেই আছেন। বিদেশ পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে গণধোলাইয়ের মুখে পড়ার ঝুঁকি তারা নিতে চাইছেন না।
তবে এক জায়গায় বেশিক্ষণ নয়। বারবার জায়গা পরিবর্তন করছেন বিপ্লব-ফাহরিয়া। তারা ঠিক বুঝতে পারছেন না কোথায় থাকাটা নিরাপদ।
এছাড়া অনুসারী নেতাকর্মীদের সাথে প্রায় প্রতিদিন WhatsApp-এ যোগাযোগ করছেন বিপ্লব। এর মধ্যে মুন্সিগঞ্জে কর্মরত পুলিশ-প্রশাসনের সদস্যসহ শহরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা রয়েছেন। প্রথম দিকে বিপ্লব ও তার স্ত্রী নেতাকর্মীদের ‘আবারও ফিরে আসবেন মুন্সিগঞ্জে’ এরকম কথা বলে শান্ত রাখার চেষ্টা করলেও গতকাল সকল পদ থেকে মহিউদ্দিন পরিবারের পতন ঘটলে এই কথার পরিবর্তন হয়েছে। গতকাল থেকে তারা নেতাকর্মীদের ফোনও ধরছেন কম।
বিপ্লবের স্ত্রী ফাহরিয়া আফরিনও খোঁজখবর নিতে ব্যবহার করছেন WhatsApp। তবে এ ক্ষেত্রে নতুন একটি নাম্বার ব্যবহার করছেন তিনি।
মহিউদ্দিন পরিবার নিয়ে আমাদের প্রতিবেদন: পরিবারনামা: পালিয়েছেন মহিউদ্দিন-বিপ্লব-আনিস-ফাহরিয়া-সোহানা
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ৫ আগস্টের পর থেকে গতকাল ১৯ আগস্ট রাত ১২ টা পর্যন্ত বিপ্লবের মোবাইল-ইন্টারনেটে কল এসেছে ১৩৮ টি। আর তিনি কল করেছেন ২৩৭ জায়গায়। বিপ্লবের স্ত্রী চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের মোবাইলে কল এসেছে ১২২টি। আর তিনি কল করেছেন ৬৭ জায়গায়।
২০ আগস্ট মধ্যরাতে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় ফয়সাল বিপ্লবকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। তবে এ মামলায় নাম নেই তার বাবা মহিউদ্দিন, চাচা আনিস উজ্জামান ও স্ত্রী চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের। তবে, ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জে শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় মূখ্য ভূমিকায় থাকা এই পরিবারের সকল সদস্যকেই নজরদারিতে রেখেছে গোয়েন্দা বাহিনী। যে কোন সময় এদের গ্রেপ্তার করে আইনের মুখোমুখি করা হবে।
প্রসঙ্গত; গত ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেটে এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে জেলা সদরের চরাঞ্চল থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, তার পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব ও তার স্ত্রী মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারী। আগেরদিনই তারা মোবাইল ফোন ও সাক্ষাৎয়ে এই নির্দেশ পান।
ওইদিনের ঘটনায় ৩ জন নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়া অন্তত ৯৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন দেড় শতাধিক।
আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ফরাজী (৩৫), মো. সজল (৩০) ও ডিপজল (১৯)। নিহতদের মধ্যে রিয়াজুল মৃত কাজী মতিনের ছেলে, সজল আলী আকবরের ছেলে ও ডিপজল সিরাজ সরদারের ছেলে। এরা সকলেই শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।