দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার পদ্মা নদীর কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌপথ। নিয়ম-কানুনকে তোয়াক্কা না করে এই পথে শতাধিক ছোট বড় পুরনো লঞ্চ রং চং ও জোড়াতালি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পারাপার করছে। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
গত বৃহস্পতিবার নৌ-দুর্ঘটনায় ৩২ জনের লাশ উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ রয়েছে দেড় শতাধিক। তবে এই হিসাব আনুমানিক। দায়িত্বশীল কর্র্তৃপক্ষের কাছে কোনো সঠিক হিসাব নেই। কর্র্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি না থাকার কারণে সব সময়ই লঞ্চ মালিকরা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে বলে অভিযোগ।
গুরুত্বপূর্ণ এই পথে দীর্ঘদিনের পুরনো লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে লঞ্চ চলাচল করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক যাত্রী।
কাওড়াকান্দি লঞ্চ মালিক সমিতির হিসাব অনুযায়ী এই পথে তালিকাভুক্ত ১১৮টি লঞ্চ চলাচল করে। তবে বিআইডব্লিউটিএ এর হিসাব মোতাবেক লঞ্চের সংখ্যা ৮৭টি।
কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌপথে অবাধে ৩০ থেকে ৪০ বছরের পুরনো ফিটনেসবিহীন লঞ্চ দিয়ে প্রতিনিয়ত যাত্রী পারাপার করছেন লঞ্চ মালিকরা। এই পথ দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চ চলাচল করায় প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। ঝড়-বাদলের মৌসুমে লঞ্চে পারাপার হয়ে ওঠে আরো ঝুঁকিপূর্ণ।
লঞ্চগুলো মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা। সম্প্রতি দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে পদ্মা নদীর মাঝে লঞ্চের তলা ফেটে গেলে কাছাকাছি একটি চরে উঠলে প্রাণে বেঁচে যান শতাধিক যাত্রী।
এ ব্যাপারে কাওড়াকান্দি লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
এই নৌপথ দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের দাবি, কাওড়াকান্দি-মাওয়া নৌপথের লঞ্চ মালিকরা বেশি মুনাফা লাভের আশায় ফিটনেসবিহীন লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে পারাপার করে বড় কোনো ধরনের দুর্ঘটনার কবলে না পড়ে প্রশাসন যেন সেদিকে নজর রাখে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হুসাইন জানান, মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌপথে ৮৭টি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করে। যাতে লঞ্চ মালিকরা অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে সেদিকে আমরা প্রতিনিয়তই নজর রাখছি। যাতে কোনো ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচল করতে না পারে সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।