পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের অগ্রিম উৎসে কর মওকুফের আবেদন করা হয়েছে। আবেদনপত্রে মূল সেতু র্নিমাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানির আমদানি করা সকল পণ্যের অগ্রিম উৎসে কর মওকুফ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এসেছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প একটি প্রথম শ্রেণীর জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম নিয়মিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কারণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করতে হবে।
এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শত শত পণ্য আমদানির প্রয়োজন হবে। প্রতিটি পণ্যের আলাদাভাবে শুল্কায়ন ও উৎসে কর মওকুফ করতে গেলে অনেক সময় লাগবে।
একই সঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা পণ্যের খালাসে জটিলতা সৃষ্টি হবে। কারণ কাজের প্রয়োজন ও স্তর অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের পণ্য আমদানি করতে হবে এবং এগুলো দ্রুত খালাস করতে হবে। তা না হলে কাজের গতিশীলতা নষ্ট হবে।
তাই পদ্মা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সকল আমদানি করা পণ্যের অগ্রিম উৎসে কর ঢালাওভাবে মওকুফের জন্য উদ্যোগ নিতে এনবিআরের কাছে অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়। এজন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এনবিআরকে বিদ্যমান কর আইনের ধারা-৭ এর (ঘ) অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, সেতুর প্রয়োজনে আমদানি করা সবগুলো পণ্যের অগ্রিম উৎসে কর প্রত্যাহার করে সিদ্ধান্ত নিলে নির্মাণ কাজে আরো গতিশীলতা আসবে।
চিঠিতে এনবিআরকে নিশ্চয়তা দিয়ে বলা হয়, চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং আমদানি করা সকল পণ্যের ব্যবহার শুধুমাত্র পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হবে। আমদানি করা পণ্যের কোনো বাণিজ্যিক ব্যবহার হতে দিবে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
নির্মাণ কাজের অগ্রগতি চলমান রাখতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আমদানি করা পণ্যের সেতু নির্মাণ প্রকল্প দপ্তরের কর্মকর্তাদের খালাসের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অগ্রিম উৎসে করের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বলেছে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এবিষয়ে বলেন, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে এর আগেও ঢালাওভাবে সব পণ্যের শুল্কায়ন মওকুফের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু এনবিআর পণ্য যাচাই-বাছাই করার পর শুল্কায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এই মর্মে প্রস্তাবটি অনুমোদন করেনি।
তিনি বলেন, এখন আবার সকল পণ্যের শুল্কায়ন মওকুফের জন্য তারা চিঠি দিয়েছে। চিঠির কপি অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবে এনবিআর।