মুন্সিগঞ্জ, ৩১ জানুয়ারি, ২০২২, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ফুলদী নদীর বেশ কিছু অংশ ভরাট করে জাহাজ মেরামত-নির্মাণ কারখানা তৈরির অভিযোগ উঠা ‘থ্রি এঙ্গেল মেরিন লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি অয়েল ট্যাংকার ও একটি ফ্লোটিং জাহাজ বানানোর পর সরকারের প্রতিমন্ত্রীকে এনে তা উদ্বোধন করিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।
প্রতিষ্ঠানটিকে ‘দখলদার’ চিহ্নিত করে নদী রক্ষা কমিশন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বিভিন্ন সংগঠন বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।
অভিযুক্ত সেই প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত হয়ে সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিসির ২টি ওয়েল ট্যাংকার ও একটি ফ্লোটিং জাহাজের উদ্বোধন করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
গতকাল রোববার (৩০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওটি সাফা ও ওটি মারওয়া নামের সদ্য নির্মিত ওয়েল ট্যাংকার দুটি সহ একটি ফ্লোটিং ওয়ার্কশপের উদ্ধোধন করেন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বিআইডব্লিউটিসির বছরে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা খরচ হতো জ্বালানী তেল পরিবহনে। তবে এ জাহাজ দুটো নির্মাণ করায় খরচ এক চতুর্থাংশ কমে আসবে। প্রাথমিকভাবে পরিবহন করা হবে সংস্থাটির মালিকানাধীন বিভিন্ন নৌযানের জ্বালানি তেল। পাশাপাশি চাইলে তেল পরিবহনের জন্য ভাড়া ও দেয়া যাবে।
এসময় শিপিং ব্যবসার ক্ষেত্রে দেশ ও নদীর স্বার্থ রক্ষার নির্দেশনা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, শিপ বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের বিশাল সম্ভাবনা, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম যোগানধার হতে পারে শিপ বিল্ডিং। তবে সেখানে আমাদের কমিটমেন্ট থাকতে হবে। আমরা ব্যবসা করবো সেক্ষেত্রে যেনো দেশের স্বার্থ ও নদীর স্বার্থও দেখা হয়।
জানা যায়, প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত দুটি ওয়েল ট্যাংকারের ধারণ ক্ষমতা ৬ লাখ করে মোট ১২ লাখ লিটার তেল। ট্যাংকার দুটি দিয়ে বিআইডাব্লিউটিসি নৌযানে তেল সরবরাহ করা হবে। কম গভীরতায়ও চলবে এ জাহাজ দুটো। আর এতে ব্যবহার করা হয়েছে ৪৫০ হর্স পাওয়ারের সুইডেনের স্ক্যানিয়া ইঞ্জিন। আপাতত চলবে, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, মুন্সিগঞ্জ ও মাদারীপুর রুটে। এদিকে ২কোটি ৩৬লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ফ্লোটিং ওয়ার্কশপ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিআইডাব্লিউটিসির নৌযান মেরামতের কাজ করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুলতান আব্দুল হামিদ, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক কমডোর আবু জাফর মোঃ জালাল উদ্দিন, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিক, জাহাজ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান থ্রী এ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম।
নদী দখলের অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম জানান, ২০০৯ সাল থেকে তারা এখানে জমি কিনছেন। যথাযথ আইন মেনেই সব জমি কিনেছেন এবং বালু ভরাট করা হচ্ছে। যদি সবকিছু নিয়ম অনুযায়ীই করে থাকেন তাহলে কেন তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ উঠছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগে বিআইডব্লিউটিসি’র প্রকৌশলী ছিলাম। পরে নিজের ব্যবসা শুরু করি। কিন্তু প্রাক্তন সহকর্মীদের কয়েকজন বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেননি।
বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, থ্রি এঙ্গেল আগেও তাদের জলযান বানিয়ে দিয়েছে। নিয়ম মেনেই তারা তা তৈরি করে।