৭ মে, ২০১৯ ইং
শিহাব আহমেদঃ ভাগ্যোন্নয়নের আশায় ১ বছর আগে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে বিদেশে যাওয়া রুমা এবার দেশেই শুরু করেছেন নতুন জীবন। ফেরি করে কাপড় বিক্রি করার পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ২২ হাজার টাকায় মেয়েদের পোষাক কিনে সেগুলো বিক্রি করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
অভিবাসীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগী হিসেবে কর্মরত বেসরকারি সংগঠন ‘অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম-ওকাপ’ এর আর্থিক সহায়তায় স্বাবলস্বী হওয়ার ভরসা পেয়েছেন বলে ‘আমার বিক্রমপুর’ কে জানিয়েছেন মুন্সিগঞ্জ সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নের পশ্চিম দশকানি এলাকার বিদেশ ফেরত রুমা।
তিনি জানান, ‘পরিবারের আর্থিক অভাব অনটনের কথা ভেবে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে যাই।’
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বিদেশ ফেরত রুমা আরও জানান, ‘দালাল ২৫ হাজার টাকার কথা বলে পাঠালেও সৌদি আরবে গিয়ে বেতন পাই মাত্র ১৪ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে একাধিক বাসায় কাজ করতে জোর করা হতো। কিন্তু এদিকে খাবারও ঠিক মত খেতে দিত না।’
রুমার সাথে এসব ঘটার ৭ মাস পর শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে বিদেশ থেকে ফেরত আসেন। দেশে এসে পিতা ও স্বামীহিন রুমার জীবনে অর্থনৈতিক দৈন্যতা আরও প্রকট হতে থাকে।
এরমধ্যে নিজেদের এক মাঠকর্মীর কাছে রুমার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার খবর পেয়ে সাহায্যে এগিয়ে আসেন ওকাপের কর্মকর্তারা। তারা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর সোমবার (৬ এপ্রিল ২০১৯ইং) রুমার হাতে নতুন ক্রয়কৃত মেয়েদের বিভিন্ন পোষাক সামগ্রী তুলে দেন ব্যবসা করতে। এর আগে ওকাপ তাকে ‘জীবন দক্ষতা বিষয়ক’ প্রশিক্ষণও দেয়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, (পঞ্চসার ইউপির সংরক্ষিত নারী আসনের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য) শিল্পী বেগম আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ‘নারীদের বিদেশে যাওয়ার আগে আরও সতর্ক হওয়া উচিৎ। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ফেরত আসার পরে তারা সমাজের কাছ থেকে সহায়তা না পেয়ে উল্টো সামাজিক মর্যাদা হারানোর ঝুকিতে থাকে। তাই তাদের যদি স্বাবলম্বী করা যায় তারা সামাজিক মর্যাদা হারানোর যে ভয় সেটা কাটিয়ে উঠবে।’