১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শনিবার | রাত ৩:০৩
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
দিঘীরপাড়ে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ ৩ জেলার লাখো বাসিন্দার
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২০ নভেম্বর ২০২৪, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড়ে পদ্মার শাখা নদীর উপর মাত্র দেড়শো মিটার দূরত্বে একটি মাত্র সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নদীবেষ্টিত ৩টি জেলার কয়েক লাখ মানুষের। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে পারাপারে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে চরাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন-বিপণনে।

জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে আশ্বাস মিললেও দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে, সেতু নির্মাণে প্রাথমিক পরিকল্পনাসহ অগ্রগতির কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।

জানা যায়, শরীয়তপুরের নওপাড়া, চরআত্রা, ঘড়িষার ও চাঁদপুরের হাইমচর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের অন্তত ৫ জনপদের সাথে মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী প্রান্তের মেলবন্ধন ঘটেছে দিঘীরপাড় বাজার সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীর মাধ্যমে। যুগ যুগ ধরে এই এলাকার কয়েক লক্ষাধিক বাসিন্দা শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষিপণ্য পরিবহনসহ ঢাকায় যাতায়াতে পথটি ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়া মুন্সিগঞ্জ প্রান্তের দিঘীরপাড় বাজারে নিত্যনৈমিত্তিক কাজে আসতে হয় ওপারের বাসিন্দাদের। কিন্তু সেতু না থাকায় ট্রলারই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এখানে।

দিঘীরপাড় বাজারে পদ্মার শাখা নদী আলাদা করে রেখেছে দুই প্রান্তের কয়েক লাখ মানুষকে। ছবি: আমার বিক্রমপুর।

নিয়মিত চলাচলকারীরা জানান, নদীতে সামান্য পানি বাড়লেই জীবন ঝুঁকিতে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন তারা। তাছাড়া রাত হলে ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেয়া ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় ‍মানুষের ভোগান্তি বেড়ে দ্বিগুন হয়ে যায়।

শরীয়তপুরের নওপাড়া এলাকার কৃষক হোসেন খাঁ বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রতিবছর শুকনা মৌসুমে আলুর চাষ হয়। সেসময় ক্ষেত পরিচর্যায় ভারি যন্ত্রপাতি লাগে। কিন্তু এলাকায় সেতু না থাকায় আমাদের কোন উপায় থাকে না। ফলে বেশি অর্থ ব্যায় করে ঘোড়ার গাড়ি বা দিনমজুর আনতে হয়।’

একটি সেতুর অভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় ৩ জেলার লাখো বাসিন্দার। ছবি: আমার বিক্রমপুর।

স্থানীয় বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী আলী আক্কাস বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমরা এইখানে সেতুর জন্য দৌড়াদৌড়ি করতাছি। বারবার আমরা খালি আশ্বাসই পাই। সেতু আর পাই না।’

দিঘীরপাড় বাজারের ব্যবসায়ী মোস্তফা হালদার বলেন, ‘ভাঙনপ্রবণ পদ্মার এই দুই প্রান্তের দুরত্ব মাত্র দেড়শো মিটার। উভয়প্রান্তের সংযোগ ঘটাতে একটি সেতু নির্মিত হলে কয়েক লাখ মানুষের ভোগান্তি কমবে। তাছাড়া ৩ জেলার কৃষি অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে এই সেতু।

টংগিবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহ্ মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এই এলাকাটিতে সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে গত কয়েকবছর ধরেই আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দক্ষ টিম এসে এটির পরিবেশগত ফলাফলের মূল্যায়ন, মরফোলজি এবং হাইড্রো মরফোলজি সম্পন্ন করেছে। পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কতৃক প্রকল্প চূড়ান্তকরণের মাধ্যমে এই এলাকায় সেতু নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’

 

error: দুঃখিত!